ইজিবাইক চালক হত্যায় দুইজনের যাবজ্জীবন

চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম,  চাঁদপুর  #

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দক্ষিণ ইসলামাবাদ গ্রামে নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ইজিবাইক চালক ইব্রাহীম পাটোয়ারীকে (৪৮) হত্যার অপরাধে মো. আরিফ হোসেন (৩৫) ও মো. সবুজকে (২৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই ঘটনায় আদালত অপর ধারায় আসামিদেরকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৪ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সামছুন্নাহার এই রায় দেন। আসামিদের উপস্থিতিতেই  এ রায় হয়।

হত্যার শিকার ইব্রাহীম পাটোয়ারী উপজেলার দক্ষিণ ইসলামাবাদ গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির আবুল কাশেম পাটোয়ারীর ছেলে। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আরিফ হোসেন উপজেলার দক্ষিণ ইসলামবাদ গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. নুরুল ইসলামের ছেলে এবং মো. সবুজ ইন্দুরিয়া ইসলামাবাদ গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির শহীদুল ইসলামের ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, হত্যার শিকার ইব্রাহীম ও তার স্ত্রী নিলুফা বেগমের সাথে পারিবারিক কলোহের কারণে বিরোধ ছিলো। যার ফলে তিনি নিকটাত্মীয়র বাড়িতে চলে যান। এরই মধ্যে ইব্রাহিম নিজের দুটি ইজিবাইক ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করেন। ঘটনার সময় ২০২০ সালের ৯ মার্চ রাতে ইব্রাহীম তার স্ত্রীর সাথে দেখা করার জন্য আত্মীয় বাড়িতে যান। ওই বাড়ি থেকে ইব্রাহীমকে ফোন করে ডেকে নেন আসামি ইব্রাহীম ও সবুজ।

এরপর ১০ মার্চ রাতে আসামিরা ইব্রাহীমের সাথে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ওই এলাকার জনৈক আব্দুল কাদিরের মাছ চাষের পুকুরে ফেলে যান। ১৩ মার্চ স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন পুকুরে মরদেহ ভেসে উঠেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ইব্রাহীমের স্ত্রী নিলুফা বেগম তার স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করেন।

এই ঘটনায় নিলুফা বেগম ১৩ মার্চ মতলব উত্তর থানায় আরিফ ও সবুজকে আসামি দিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরর পর ১৫ মার্চ আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে থানা পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতলব উত্তর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট কুহিনুর বেগম বলেন, মামলাটি পাঁচ বছরের অধিক সময় চলমান অবস্থায় আদালত ১৬জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও আসামিরা তাদের অপরাধ শিকার করায় বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, মাসুম হোসেন ভুঁইয়া ও সেলিম মিয়া।

inside post
আরো পড়ুন