খাদির শুরুর ইতিহাস

 

তৈয়বুর রহমান সোহেল ।।

খাদে বসে হ্যান্ডলুমে তাঁত বোনা হয় বলে এ কাপড়ের নাম খাদি হয়েছে। খাদির জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত এ কথাটি প্রচলিত আছে। দুর্গাপূজার দশমীর দিন কুমিল্লায় খাদি কাপড় বিক্রির জোয়ার সৃষ্টি হতো। ব্যবসায়ীরা দলবেঁধে এসে খাদি কাপড় নিয়ে যেতেন।

 

কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা করেন আহসানুল কবির। তিনি বলেন, খাদির গোড়াপত্তন হয়েছে একশ বছরের বেশি সময় আগে। ওই সময় শুধু খাদি কাপড় নয়, কুমিল্লার বেনারসি শাড়িরও তুমুল চাহিদা ছিল। সারা বিশ্বেই কুমিল্লার শাড়ি ও খাদি কাপড়ের নামডাক ছিল। স্বদেশি আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধী বিদেশি পণ্য বয়কটের ডাক দেন। মোটা কাপড়, মোটা ভাত-সর্বত্র এমন আওয়াজ ওঠে। স্বদেশি আন্দোলনের পর খাদি কাপড়ের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠে যায়। মহাত্মা গান্ধী নিজেও খাদির চাদর পরিধান করতেন। কুমিল্লার মানুষ খাদি কাপড় পছন্দ করতেন। বড় বড় নেতারা খাদির পায়জামা, চাদর, পাঞ্জাবি পরে গৌরববোধ করতেন। এটার প্রচলন গত ৩০ বছর পূর্বেও ব্যাপকহারে ছিল। তিনি আরও বলেন, খাদি কুমিল্লাকে ব্র্যান্ডিং করে। একে ভালোভাবে টিকিয়ে রাখা জরুরি।

 

কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সানাউল হক বলেন,খাদি ​কুমিল্লাকে প্রতিনিধিত্ব করে। তাঁত শিল্পীরা যদি আমাদের কাছে স্বল্পসুদে ঋণ ও মার্কেটিংয়ের সহায়তা চায়, দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে তাদেরকে সহায়তা করা হবে। আমরাও চাই, খাদি যুগ যুগ ধরে টিকে থাকুক।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, খাদি শিল্পীরা যাতে সহজে তাদের উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারেন, সে জন্য এডিসির (জেনারেল) মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর সাথে কথা বলে কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। কুমিল্লায় এসে আমি নিজেও খাদি কাপড়ের পাঞ্জাবি পরে ব্র্যান্ডিং করি। ওদের জন্য ব্র্যান্ডিংয়ের ব্যবস্থাও করা হবে।