তিন পাগলের কাজ কারবার!

মরিচ চাষে ৩০হাজার পুঁজি-বিক্রি৩লাখ টাকা!
মহিউদ্দিন মোল্লা ।।
নাটাপাড়া। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এখন নিরাপদ সবজি খেতে পারেন। নিরাপদ বিষমুক্ত সবজির এই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তিন প্রবাসী বন্ধু। তারা হচ্ছেন, মালেয়শিয়া প্রবাসী আফজাল হোসেন ইমরান, দুবাই প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও ওমান প্রবাসী ইকবাল হোসেন মজুমদার। তারা মালচিং পেপার দিয়ে চারা লাগান। সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করেন। জমিতে ব্যবহার করেন জৈব সার ও খৈল। জমিতে লাগান হলুদ ট্র্যাপ। তাদের নতুন প্রযুক্তি দেখে গ্রামের অনেকে প্রথম দিকে হাসাহাসি করতেন। বলতেন-তিন পাগলের কাজ কারবার! প্রবাসের টাকা গুলো পানিতে ঢালতে এসেছে। তিন প্রবাসীর সফলতা দেখে এখন ওই ব্যক্তিরাও এগিয়ে আসছেন। ঝুঁকছেন নিরাপদ সবজি ও ফসল উৎপাদনে। আগামীতে তারা আরো এক একর জমিতে পেঁপের চাষ করবেন, তা বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,মালচিং পেপারের মাঝে মরিচ গাছ লাগানো হয়েছে। ৩০হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে মরিচ লাগিয়েছেন। সোয়া লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করেছেন। আরো ২লাখ টাকার বিক্রির আশা করছেন। একই প্রক্রিয়ায় পুঁই শাক,শসা, টমেটো,জিঙ্গা ও ধুন্দল লাগানো হয়েছে। মাচায় ঝুলছে সবুজ লাউ। লাউয়ের রূপ যেন গলে গলে পড়ছে! এদিকে তিনজন উদ্যোক্তা রোদে হ্যাট মাথায় দিয়ে কাজ করছেন। জমির পাশে নগদ টাকায় সবজি বিক্রি করে তারা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন।
আফজাল হোসেন ইমরান বলেন,প্রবাস থেকে এসে সবজির চাষ শুরু করেন। এক পর্যায়ে কৃষি অফিসের পরামর্শে বিষমুক্ত সবজি চাষ শুরু করে ভালো লাভ পান। এক সময় দেখেন শ্রমিকের সংকট। শ্রমিকের মূল্যও বেশি। তাই প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও ইকবাল হোসেন মজুমদার সহযোগিতা গ্রহণ করেন। তিনজন মিলে নিজেদের জমি ও লিজ নেয়া জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন। নিজেরা নিরাপদ সবজি খাওয়ার সাথে বিক্রি করে তারা লাভবান হচ্ছেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরিফ সোলায়মান মজুমদার বলেন, ২একরের বেশি জমিতে তিন তরুণ নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন। নিরাপদ হওয়ায় তাদের পণ্য তেমন বাজারে নিতে হয় না। ক্রেতা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জমিতে এসে কিনে নেন। আমরা নাটাপাড়ার তিন কৃষি উদ্যোক্তাসহ অন্যদের পরামর্শ দিয়ে আসছি। এছাড়া পার্টনার প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের প্রণোদনা দিয়েছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোবায়ের আহমেদ বলেন, গুড এগ্রিকালচার প্র্যাকটিসের মাধ্যমে তিন উদ্যোক্তা ভালো করছেন। তাদের নিরাপদ সবজি উৎপাদনের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। সেই সবজি মানে উত্তীর্ণ হলে রপ্তানির সম্ভানা রয়েছে। তাদের মতো তরুণরা কৃষিতে এগিয়ে এলে দেশ আরো এগিয়ে যাবে।
