দুই বন্ধুর গাছে হাসছে নগরীর পার্ক দিঘি নদীরপাড়

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা নগরী। সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে এখানে ভবনগুলোর আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। কাটা পড়ছে গাছ-পালা। সবুজ পরিবেশ হয়ে উঠছে ধূসর। সেই পরিবেশকে ¯িœগ্ধ সবুজ রাখতে কাজ করছেন দুই বন্ধু। কুমিল্লা নগরীর ধর্মসাগর দিঘিরপাড়ে,গোমতী নদী,তাল পুকুরপাড়,ঈদগাহ ও নিউ হোস্টেলের পাশে হাসছে তাদের লাগানো ফুল ফল গাছ। বৃক্ষপ্রেমী মোজাম্মেল খান ও জামিল খান। একজন ছোট ঠিকাদার,আরেকজন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। সময় পেলে একটা ভাঙ্গা মোটর সাইকেল নিয়ে ছোটেন। একজন চালান আরেকজন পেছনে গাছের চারার ব্যাগ নিয়ে বসেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সময় ওয়াইল্ড ইনফো নামে একটা পরিবেশবাদী সংগঠন নিয়ে যাত্রা শুরু করেন জামিল খান, তার বাড়ির পাশের ধর্মসাগর পাড়ে লাগান নানা বৃক্ষ। আরেক বন্ধু মোজাম্মেল খান নিজের টাকায় গাছ কিনে মোটরসাইকেল যোগে দূর দূরান্তের স্কুল কলেজ, বাজার, রাস্তার ধারে, মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তা রোপন করতে থাকেন, চারদিকে জানাজানি হয়ে গেলে গাছের জন্য আবদার আসতে থাকে। এতো আবদার অনুরোধ শুনে তারা কখনো বিরক্ত হন না। নিজের টাকায় গাছের চারা কিনে তা রোপন করে দিতে ছুটে যান মানুষের বাড়িতে। এভাবে মোজাম্মেল খান ও জামিল খানের বৃক্ষে সবুজ হয়ে উঠে প্রকৃতি। বিশেষ করে গোমতী পাড়ের রাস্তার পাশ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে মানুষের কাছে তারা হয়ে উঠেন বৃক্ষমানব।
মোজাম্মেল খান বলেন,আনন্দ পাই তাই গাছ লাগাই। আমাদের সামর্থ্য সীমিত। গাছ উৎপাদনের পর বিতরণ করতে পারলে আরো বেশি সেবা দেয়ার সুযোগ পাবো। গাছ উৎপাদনে একটু জায়গা পেলে সুবিধা হবে।
জামিল খান বলেন,বেড়ে উঠা গাছের পাশে দাঁড়ালে মনে আনন্দ পাই। কেউ গাছ নষ্ট করলে কষ্ট পাই। নগরীতে ফলজ গাছের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এতে পাখির খাদ্যের যোগান হবে।
সমাজকর্মী আহসান হাবিব বলেন, সরকারি ও সামাজিক সহায়তা পেলে মোজাম্মেল খান ও জামিল খানের মতো বৃক্ষপ্রেমীরা মানুষের জন্য আরো বেশি কাজ করতে পারবেন। তারা গড়ে তুলতে পারবেন মানুষ ও পশুপাখির জন্য সুন্দর পরিবেশ। এতে বাসযোগ্য হয়ে উঠবে আমাদের চারপাশ।
কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির পরিচালক ডা.আবু নাইম বলেন, মোজাম্মেল খান, জামিল খান গাছ ও পাখি প্রেমী মানুষ। তাদেরকে মোটরসাইকেলে ঘুরে ঘুরে গাছ লাগাতে দেখেছি। তাদের দেখে অন্যরাও গাছ লাগাতে উৎসাহিত হচ্ছেন।
কুমিল্লার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন, নগরীতে মানুষের প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ নেই। সেখানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে যতটুকু জেনেছি মোজাম্মেল খান ও জামিল খানের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তাদের সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসতে পারেন। যোগাযোগ করলে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তাদের গাছের চারা দিয়ে সহযোগিতা করবো।

inside post
আরো পড়ুন