প্রতারণা করে গাড়ী ছিনতাই ২৪ ঘন্টায় চার্জশীট দাখিল
আরো পড়ুন:
অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লায় প্রতারণা করে গাড়ি ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুই যুবককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আসামী কারাগারে প্রেরণের পাশাপাশি ২৪ ঘন্টার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক পরিমল দাশ।
পরিমল দাশ জানান, ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যে দুই আসামী আটক ও ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। গ্রেফতার দুই আসামীর মধ্যে প্রধান আসামী আসিফ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ বলেন, আসলে এটা পুলিশের দায়িত্ব। যে কোন ঘটনায় দ্রুত সময়ে আসামী গ্রেফতার ও চার্জশিট দেয়া। সে কাজটাই আমরা করেছি। আমি বিশ্বাস করি এতে করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত রোববার ১৫ অগাস্ট সকালে জেলার বুড়িচং উপজেলার ডকলাপাড়া গ্রামের প্রাইভেটকারচালক আবদুল কুদ্দুসকে চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য বলেন আসিফ ও শাহজালাল। তারা কুদ্দুসকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা ভাড়া দিতে চান।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা সদরের টমসমব্রিজ এলাকায় একটি প্রাইভেটকার নিয়ে আসেন কুদ্দুস। গাড়িটির মালিক একই উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের মণিপুর গ্রামের মিজানুর রহমান।
ওই সময় কুদ্দুসকে নিয়ে নাস্তা করতে যান আসিফ ও শাহজালাল। পরে তারা কৌশলে কুদ্দুসের কফির মগে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট মিশিয়ে দেন।
কিছুক্ষণ পর তারা সবাই প্রাইভেটকারে রওনা দেন। একপর্যায়ে চালক কুদ্দুস অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে গাড়ির পেছনে বসিয়ে গাড়ি চালাতে থাকেন আসিফ। পথে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানার হেয়াকো এলাকায় নিয়ে একটি পাহাড় থেকে কুদ্দুসকে ফেলে দেন আসিফ ও তার সঙ্গী শাহজালাল।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে জানায়। পুলিশ কুদ্দুসকে হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে প্রাইভেট কারের মালিক মিজানুর চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থেকে কুদ্দুসকে কুমিল্লায় নিয়ে আসেন।
মঙ্গলবার বিকেলে কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন প্রাইভেটকার মালিক মিজানুর। পরে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) স্থানান্তর করা হয়।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের এসআই পরিমল দাশ জানান, প্রযুক্তির ব্যবহার করে মামলা করার ১২ ঘণ্টার মধ্যে আসিফ ও শাহজালালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে মামলার আসামি আসিফকে নগরীর ইয়াছিন মার্কেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করি। তার দেয়া তথ্যমতে গাড়ি উদ্ধার করি ও কনেশতলা গ্রাম থেকে অপর আসামি শাহজালালকে গ্রেপ্তার করি।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, বিভিন্ন কারণে ঋণগ্রস্ত ছিলেন তারা। ঋণ পরিশোধ করতেই গাড়ি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছেন।
তিনি আরও জানান, বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হলে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।