অনলাইন ডেস্ক।।
চতুর্থ ম্যাচে এক ওভারে ৫ ছক্কা খেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ম্যাচটি হারের পর সমালোচনায় এফোঁড়-ওফোঁড় হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার সাকিব গতকাল পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে বিধ্বংসী পারফরম্যান্সে জবাব দিয়েছেন সমালোচকদের। মিরপুরের ধীরলয়ের উইকেটে ঘূর্ণির মায়াবী জালে টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়াকে ৬২ রানে গুটিয়ে বাংলাদেশকে ৬০ রানের আকাশসম জয় উপহার দিয়েছেন। স্কোরটি আবার অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বনিম্ন রান। এই জয়ে বাংলাদেশ পাঁচ ম্যাচ সিরিজ জিতেছে ৪-১ ব্যবধানে। চতুর্থ ম্যাচ হেরে যাওয়ায় হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন পূরণ হয়নি টাইগারদের। তবে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়টি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সোনালি হরফে লেখা থাকবে।
অস্ট্রেলিয়ার লজ্জার দিনে সাকিব আবার বিশেষ একটি মাইলফলক গড়েছেন। টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে উইকেটের সেঞ্চুরি করেছেন। শ্রীলঙ্কার ফাস্ট বোলার ল্যাসিথ মালিঙ্গার পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে বাঁ হাতি স্পিনার ১০০ উইকেট নেওয়ার বিরল কীর্তি গড়েছেন। মালিঙ্গার উইকেট ৮৪ ম্যাচে ১০৭। সাকিবের উইকেটে ৮৪ ম্যাচে ১০২টি। গতকাল তিনি অস্ট্রেলিয়াকে ১৩.৪ ওভারে ৬২ রানে অলআউট করতে দুর্দান্ত বোলিং করেন। ম্যাচ শেষে তার বোলিং স্পেল ৩.৪-০-৯-৪। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ২০ রানে ৫ উইকেট। পুরো সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে সিরিজ সেরা হয়েছেন। সিরিজে তার রান ১১৯ ও উইকেট ৭টি।
টানা তিন ম্যাচ জিতে সিরিজ আগেই নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। চতুর্থ ম্যাচ জিতে ব্যবধান কমায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। গতকালের ম্যাচটি ছিল পাঁচ ম্যাচ সিরিজের শেষ। সিরিজ আগেই নিষ্পত্তি হওয়ায় শেষ ম্যাচটি ছিল আনুষ্ঠানিকতার। তারপরও গুরুত্ব অপরাপর ম্যাচগুলোর চেয়ে কম ছিল না। ম্যাচটিতে দুই দলই একাদশে দুটি করে পরিবর্তন এনেছে। টাইগাররা বিশ্রাম দিয়েছে বাঁ হাতি পেসার শরীফুল ও শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে। তাদের জায়গা সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামেন সিমিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
একাদশের পাশাপাশি ওপেনিং জুটিতেও পরিবর্তন আনেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। আগের চার ম্যাচে পুরোপুরি ব্যর্থ সৌম্য সরকারকে মিডল অর্ডারে পাঠানো হয়। দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও মেহেদী ঝড়ের গতিতে ব্যাট চালিয়ে ৪.৩ ওভারে ৪২ রান করেন। শুরুতে মেহেদী (১৪৩) ও ৮.২ ওভারে দলীয় ৫৭ রানে সাজঘরে ফিরেন নাঈম। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর পরের ব্যাটসম্যানরা আর সুবিধা করতে পারেননি। সৌম্য ১৬ ও রিয়াদ ১৯ রান করলেও ২০ ওভারে লড়াই ১২২ রান তুলে বাংলাদেশ ৯ উইকেট হারিয়ে। নাঈম সর্বোচ্চ ২৩ রান করেন ২৩ বলে ১ ছক্কা ও এক চারে। দুই অসি বোলার নাথান এলিস ও ড্যান ক্রিস্টিয়ান ২টি করে উইকেট নেন। দুই বোলারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৬-২০ ওভারে টাইগারদের সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৭ রান!
আগের চার ম্যাচের মতো গতকালও মিরপুরের উইকেটের আচরণ ছিল মন্থর গতির। ধীরলয়ের উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার টার্গেট ১২২ রান। এমন টার্গেটেই খেলতে নেমে দুই বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম ও সাকিবের ঘূর্ণিতে নাভিশ্বাস উঠেছে সফরকারীদের। দুই স্পিনারের সঙ্গে আগুন ঝরানো বোলিং করেছেন সাইফুদ্দিনও। তিন বোলারের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়া তাদের টি-২০ ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোরে অলআউট হয়। অস্ট্রেলিয়াকে লজ্জা দেওয়ার দিনে মাইলফলক গড়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে উইকেটের সেঞ্চুরি গড়েন। প্রথম বোলার হিসেবে শ্রীলঙ্কার ল্যাসিথ মালিঙ্গা এখন পর্যন্ত ৮৪ ম্যাচে ১০৭ উইকেট নিয়ে সবার উপরে রয়েছেন। সাকিবের উইকেট এখন ৮৪ ম্যাচে ১০২ উইকেট। তিনে থাকা নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলার টিম সাউদির উইকেট ৮৩ ম্যাচে ৯৯ উইকেট। সাকিবের রেকর্ড গড়া দিনে ৩ উইকেট নিয়েছেন সাইফুদ্দিন এবং নাসুম নেন ৩ উইকেট। সাকিবের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ১৩.৪ ওভারে মাত্র ৬২ রানে অলআউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। যা টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন স্কোর। বাংলাদেশের বিপক্ষেও সর্বনিম্ন। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ১৪.৩ ওভারে মাত্র ৭৯ রানে অলআউট হয়েছিল।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com