প্রবাসী স্বামীর অবর্তমানে স্ত্রীকে একাধিক এনজিও ঋণ প্রদান করেছে। ওই প্রবাসী এখন বাড়ি এসে ঋণের দায়ে জর্জরিত। কিস্তির চাপে দিশাহারা ওই প্রবাসীর অভিযোগ এনজিওগুলো কিভাবে আমার অবর্তমানে এত টাকা ঋণ দিলো। এমন ঘটনা কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার সোনাইসার গ্রামের।
ওই প্রবাসীর নাম রবিউল আলম সোহেল। তিনি কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার সোনাইসার গ্রামের বাসিন্দা। গত জানুয়ারি মাসে ফ্রান্স থেকে দেশে আসেন। আসার পর স্ত্রীর সাথে কথা বলে জানতে পারেন স্ত্রী তার অবর্তমানে অন্তত ৭ টি এনজিও থেকে অর্ধকোটির বেশী ঋণ নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রবিউল আউয়ালের স্ত্রী মারিয়া আফরিন এই পর্যন্ত ৭ টি এনজিও থেকে মোট ৬৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এনজিও গুলো হলো এসএসএস,সিসিডিএ, পল্লী মঙ্গল,দ্বীপ, টিএমএসএস, গাক ও ব্র্যাক। কিস্তি পরিশোধের মধ্যে এখন পর্যন্ত আরো ২২ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে।
ভুক্তভোগী রবিউল আউয়াল বলেন, রেমিটেন্স লোন দিলে অবশ্যই প্রবাসে অবস্থানরত ব্যক্তির সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে হবে এনজিওগুলোর। তা না করে আমার স্ত্রীকে তারা কিভাবে লোন দিলো। এটা আমার বোধগম্য নয়। আজ সাত বছর পর দেশে এসে আমি নিঃস্ব। আমি জানি আমার স্ত্রী অপরাধী। কিন্তু এনজিওগুলো কিভাবে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আমার স্ত্রীকে ঋণ দিলো। এখানে অবশ্যই এনজিওর ফিল্ড ম্যানেজাররা অবৈধ সুযোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি আরো বলেন, গত সাত বছর ফ্রান্সে থেকে যে আয় করেছেন তা দিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ শুরু করেছেন। এখনো বাড়ি নির্মাণ বাকি আছে। এই মুহূর্তে বাড়ি এসে ঋণের কথা শুনে আমি এখন দিশাহারা। আমার এক ছেলে এক মেয়ে। স্ত্রী আমাকে বলে এ ঘটনায় সে আত্মহত্যা করবে। এখন আমি কি করবো।
এদিকে এনজিওগুলোর মধ্যে গাকের ফিল্ড অফিসার রিপন জানান, তিনি তার গ্রাহক মারিয়া আফরিনের মোবাইল ফোনে তার স্বামীর সাথে কথা বলেই ঋণ দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে ফোনের অপর প্রান্তে কে ছিলো তা তিনি নিশ্চিত নন। একই কথা বললেন এসএসএস এর ফিল্ড অফিসার বিপ্লব ভদ্র। তিনি জানান, এসএসএস থেকে এখন পর্যন্ত মারিয়া পাঁচবার ঋণ নিয়েছেন। প্রতিবারই ঋণ দেয়ার সময় যতটুকু দলিলপত্রাধি রাখা দরকার। আমরা রেখেছি। আমাদের কাছে খালি চেক আছে।
সিসিডিএ ভরাসার শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কাউছার আলম জানান, মারিয়ার স্বামী ফোনে বলছে তার শ্বশুর সব জানে। মারিয়াকে ঋণ দিলে কোন সমস্যা নেই। আমরা আমাদের নিয়ম মেনেই ঋণ দিয়েছি। প্রায় সবগুলো এনজিও প্রতিনিধিরা জানান, আমরা নিয়ম মেনেই ঋণ দিয়েছি।
রবিউল আলমের স্ত্রী মারিয়া আফরিন বলেন, আসলে আমাকে ঋণ দেয়ার সময় কোন এনজিও আমার স্বামীর সাথে কথা বলেনি। তারা এখন মিথ্যা বলছে যে আমার স্বামীর সাথে কথা বলেছে। কিভাবে এত টাকা ঋণ নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে মারিয়া আফরিন বলেন, প্রথমে একটি এনজিও থেকে ঋণ নেই। এনজিওর লোকজন আমাদের ঘরবাড়ি দেখেই কাগজপত্র তৈরি করে ঋণ দিয়েছে। পরে ওই এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করতে অন্য আরো একটা থেকে ঋণ নেই। এভাবে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ি।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com