এক কিলোমিটারের হাটে দেড় কোটি টাকার মাছ বিক্রি

বৃহত্তর কুমিল্লার মাছের বড় হাটে ক্রেতার ঢল
মহিউদ্দিন মোল্লা।।
পদুয়ার বাজার। কুমিল্লা- নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। এই মাছের হাটটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। এটি বৃহত্তর কুমিল্লার মাছের হাট বড় বলে দাবি ঠিকাদারদের। কুমিল্লা নগরীর এই হাটের অধিকাংশ এলাকাজুড়ে নানা জাতের মাছের মেলা বসে। রবি ও বৃহস্পতিবার বসে হাট। এখানে দেশি কৈ, টাকি, শোল, টেংরা, চাষের রুই, কাতলা, মৃগেল, সমুদ্রের চাপিলা, লইট্যা, সুরমা, কোরাল, টুনা মাছও মিলে। যাতায়াত সহজ, দামও নাগালের মধ্যে। বর্ণিল সব তাজা মাছ পেয়ে খুশি ক্রেতারা।
শত বছরের পুরনো মাছ বাজারটি জমজমাট ৩০ বছর ধরে। এখানে শতাধিক দোকান বসে। দৈনিক বিক্রি হয় দেড় কোটি টাকার বেশি মাছ। বেশি বিক্রি হয় রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ, মৃগেল, গ্রাসকার্প, সিলভার কার্প, বিগহেড,মহাশোল ও কমনকার্প। রুই, কাতলা, মৃগেল ও কার্প জাতীয় মাছগুলো আসে দাউদকান্দি, মেঘনা ও তিতাস উপজেলার প্লাবন ভূমি থেকে। ইলিশ আসে চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে। সামুদ্রিক মাছের বেশিরভাগ আসে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে। এর মধ্যে রয়েছে চাপিলা, লইট্যা, সুরমা, কোরাল, টুনা, রূপচাঁদা, বাটা, বাইলা ও চিংড়ি। সামুদ্রিক কাঁকড়াও বিক্রি হয়। দেশি মাছ শিং, মাগুর, কৈ, টাকি, শোল, টেংরা, পাবদা, পুঁটি, কাঁচকি, বোয়াল, আইড়, বাইন ও গজার।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সারিতে বসেছে মাছ ব্যবসায়ীরা। তাজা বর্ণিল মাছ লাফাচ্ছে বিক্রেতার ঢালায়। বড় সাইজের মাছের পাশে বেশি ভিড়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক-ডাকে মুখর চারপাশ। কুমিল্লার শাকতলা, জাঙ্গালিয়া, কচুয়া চৌমুহনী, রাজাপাড়া, নেউরা, দিশাবন্দ, নোয়াগাঁও, মোস্তফাপুর, বেলতলি, কোটবাড়ি, সুয়াগাজী, মিয়াবাজার, চৌয়ারা, কালিকাপুর, লালমাই ও পিপুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার শৌখিন ক্রেতারা এখানে মাছ কিনতে আসেন। সড়কের পাশে গাড়ি রেখে মাছ কিনেন অনেকে। মাছ কাটতে ক্রেতাদের পেছনে ঘুরঘুর করছে অনেকে। মাছের পানি-কাদা এড়িয়ে চলা ক্রেতারা পছন্দের তাজা মাছটি কিনতে পেরে মুখে ফুটিয়ে তোলেন হাসির ঝিলিক। বিয়ে, জন্মদিনসহ বড় অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার ও জেলার অভিজাত রেস্তোরাঁগুলো পাইকারি মাছ কিনে পদুয়ার বাজার থেকে।
স্থানীয় শ্রীভল্লবপুরের শাহ ফয়সাল কারীম,অবসরপ্রাপ্ত সার্জন সামছুল হক ও জয়পুরের আনোয়ার হোসেন বলেন,
দাউদকান্দির বেকিনগরের ব্যবসায়ী শাহ আলম,লক্ষীপুরের সফিকুর রহমান জানান, তারা বিক্রি করেন রুই-কাতলাসহ কার্প জাতীয় মাছ। দাউদকান্দির প্লাবনভূমি থেকে মাছ আনেন। প্রতিবাজারে তিন লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেন।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের ব্যবসায়ী কামাল মিয়া জানান, ২০ বছর ধরে চাঁদপুর থেকে ইলিশ কিনে এ বাজারে বিক্রি করেন। প্রতিদিন গড়ে ৫৫-৬০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হয়। কুমিল্লার বরুড়ার জামাল হোসেন দেশি শিং ও চিংড়ি মাছ বিক্রি করেন। গড়ে তার ৪০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হয়।
বাজার কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, বাজারটি শত বছরের পুরনো। মাছ বাজারটি জমজমাট ৩০ বছর ধরে। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাছ বাজারটি বসে। এটি কুমিল্লার সর্ববৃহৎ মাছ বাজার।

 

inside post
আরো পড়ুন