সাইফুল ইসলাম সুমন ।।
১.
বাড়ি থেকে হঠাৎ বোনের ফোন। রিসিভ করতেই বোনের কান্না মাখা কথা শুনতে পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে? বলল বাবার অবস্থা ভাল না তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি আয়। আমি তখন কি করব বুঝতে পারছি না। বললাম বসে না থেকে বাবাকে যেন দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমি সেখানে আসতেছি। বাবার ফুসফুসে হাওয়া জমে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। এদিকে শীতকাল হওয়ায় বাবার শ্বাসকষ্ট কোনভাবেই কমছে না। আমি খুবই কম সময়ের মধ্যে ঢামেকে গিয়ে দেখি বাবাকে ফ্লোরে মাদুরে শুইয়ে রেখেছে। বেড খালি না থাকায় ফ্লোরেই থাকতে হচ্ছে। বাবার তখন শ্বাস নিতে প্রচুর কষ্ট হচ্ছে। এদিকে নিচ থেকে ঠান্ডা উঠায় শ্বাসটা আরো বেড়ে গেছে। তখন আল্লাহকে ডাকছি আর মনে মনে ভাবছি যদি এখানে পরিচিত কোন ডাক্তার থাকতো তাহলে হয়তো আমরা একটু সহযোগিতা পেতাম। ঠিক কিছুক্ষণ পরেই ডা. সাকিব আবরার নামের একজনের সাথে দেখা হল। ডা. সাকিব আবরারসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি টিম কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রসুলপুর রেলওয়ে স্টেশনে বন্যাদুর্গত মানুষদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছিলেন। আমি এ ক্যাম্পেইনের সংবাদ দেশের প্রাচীনতম সংবাদপত্র সাপ্তাহিক আমোদে করেছিলাম। সেখান থেকেই তাঁর সাথে আমার পরিচয়।
প্রথমে তিনি আমাকে ঠিক চিনতে পারেন নি। যখন বলছি আমি সাপ্তাহিক আমোদ-এ কাজ করি। তখন তিনি বিস্ময়ের সাথে বললেন- ও আমোদ!
এরপর তিনি বাবার কাছে গিয়ে বাবাকে দেখলেন এবং বাবার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিলেন। সেখানে তিনি আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। যতদিন বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে ছিলাম। তিনি প্রায় প্রতিদিনই বাবার খোঁজ খবর নিতেন।
২.
আমোদ- এর গত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কুমিল্লার একজন প্রবীণ আইনজীবীর শুভেচ্ছা বক্তব্য নিতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমি যখন আমার পরিচয় এভাবে দিয়েছি যে, আমি সাপ্তাহিক আমোদ এ কাজ করি। তখন তিনি বললেন ও আমোদ! এরপর তিনি আমাকে খুবই আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করলেন ও আমাকে তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্য দিলেন।
৩.
কুমিল্লা টাউন হলে একটি সংগঠনের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে কুমিল্লার গুটি কয়েকজন সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং তাদেরকে প্রবেশের জন্য কার্ড প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে আমি সেখানে গেলে আমার পরিচয় জানতে চাইলে আমি বললাম আমি সাপ্তাহিক আমোদ এ কাজ করি। তখন গার্ড বললেন কার্ড ছাড়া তো প্রবেশ করা নিষেধ। তখন ভিতর থেকে মধ্য বয়সী এক মহিলা এসে জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে? তখন গার্ড বলল ওনি আমোদ থেকে এসেছে। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন- তুমি আমোদ এ কাজ কর? আমি বললাম- হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, যেহেতু তুমি আমোদ এ কাজ কর তাহলে তোমার কার্ড লাগবে না। তুমি ভিতরে এসো।
সাপ্তাহিক আমোদ এ কাজ করার সুবাধে কুমিল্লার লোকজন খুবই আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছে। যা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। আমোদ আজ ৭১ বছরে পদার্পণ করছে। আমোদ এর জন্য রইলো অনেক অনেক শুভকামনা। সহস্র বছর বেঁচে থাকুক আমোদ সেই প্রত্যাশা।
লেখক:সভাপতি,কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতি।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com