মো.ফজলে রাব্বি,আখাউড়া(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এখন করোনার চেয়ে আখাউড়া থানার এস.আই তাজুল ইসলাম কেই ভয় পাচ্ছেন বেশি। তাজুল ইসলামের ভয়ে পৌরশহরের বিভিন্ন বাজারের দোকান পাট ও শপিংমল বন্ধ রাখছেন ব্যবসায়ীরা। করোনার শুরু থেকেই সাধারণ মানুষকে সচেতন করা এবং সরকারের বিধি নিষেধ মানার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। করোনার শুরু থেকে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া লকডাউন কার্যকর করতে তার ভূমিকা ইতিমধ্যে আখাউড়ার সচেতন মহলে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।
দারোগা তাজুল ইসলাম মানেই লকডাউনে চুরি করে দোকান খুলে ব্যবসা করা ব্যবসায়ীদের আতঙ্ক। এসআই তাজুল ইসলাম আখাউড়া শহর দারোগা হিসেবে ইতিমধ্যেই ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। নিয়মিত বাজারে আসা ছোট্ট বাচ্চা ছেলেটিও তাজু দারোগার নাম জানেন এবং চিনেন।
এসআই তাজুল ইসলাম তার নিজস্ব মোটর সাইকেলে ছোট হেন্ড মাইক লাগিয়ে নিয়মিত সাইরেন বাজিয়ে দোকান বন্ধ করার জন্য নিয়মিত বুলেটিন দিয়েই যাচ্ছেন। যারা প্রসাশনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে দোকান খোলে ব্যবসা করেন তাজু দারোগার মোটর সাইকেলের সাইরেনের আওয়াজেই একের পর এক দোকানের সাটার পরার শব্দ শুরু হয়। কঠোর লকডাউন বা করোনার ভয়ে নয়, তাজু দারোগার ভয়েই ব্যবসায়ীরা এখন দোকান বন্ধ রাখেন।
এসআই তাজুল ইসলাম নিজের মোটর সাইকেলে লাগানো ছোট হেন্ড মাইকে করে বা আখাউড়া থানার পিক-আপের উপরে লাগানো মাইকে এবং সড়ক বাজারে স্থাপন করা উপজেলা প্রশাসনের মাইকে তিনি নিয়মিত করোনার সর্বশেষ আপডেট দিয়ে মানুষকে সতর্ক করছেন এবং যারা বাজারে আসছেন তাদের কে স্বাস্থ্য বিধি মানা ও বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে না বের হতে আহ্বান করছেন।
আখাউড়া পৌরশহরের সড়ক বাজারের ব্যবসায়ী আল-আমিন চৌধুরী বলেন, এসআই তাজুল ইসলাম সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষ কে সচেতন করার জন্য যে ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তা আসলেই প্রসংশনীয়। ব্যবসায়ীরাও তার মোটর সাইকেলের সাইরেন পাওয়া মাত্রই দোকান পাট বন্ধ করে দিচ্ছেন।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মোঃ ফারুক মিয়া বলেন, যারা টুকিটাকি বাজার নিতে আসে তারাও তাজু দারোগার ভয়ে এদিকে সেদিকে ছুটাছুটি করে চলে যায়। মূলত তার ভয়েই বাজারে উপচে পড়া ভিড় কম হওয়ায় আখাউড়ায় করোনা সংক্রামনের ঝুকিটা কম বলে আমি মনে করি।
জানাগেছে, এসআই তাজুল ইসলাম ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সনে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনিতে যোগদান করেন। ১১ নভেম্বর ২০১৮ সনে আখাউড়া থানায় যোগদান করেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বেজোড়া গ্রামে। পারিবারিক জীবনে তিনি ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তিনি গত বছরের করোনা সংক্রমনের প্রথম দিক থেকে শহর দারোগা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
এই বিষয়ে এসআই তাজুল ইসলাম বলেন, আমি চাকুরীর দায়িত্বের পাশাপাশি আমার নিজের বিবেক থেকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। চাকরীর শেষ সময়ে এসে মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে মানুষকে সচেতন করার জন্য যে কাজ করছি তাতে আমার নিজেরও ভালো লাগে। আমার বা আমাদের মত কারো গাফিলতিতে যদি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যায় তখন তো আর আফসোস করারও সময় পাওয়া যাবে না। আমি সুস্থ শরীর নিয়ে যেনো দায়িত্ব পালন করতে পারি এজন্য সকলের নিকট দোয়া চাই।
আখাউড়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন,তাজুল ইসলাম আখাউড়া থানার একজন পরিশ্রমী পুলিশ অফিসার। সে পরিশ্রম করতে পছন্দ করে। শহরে লকডাউন কার্যকর করতে তার ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com