কুমিল্লায় ঘুর্ণিঝড়ে খুঁটি ভেঙ্গেছে ৮৪টি ট্রান্সফরমার বিকল ৬২টি

মাসুমুর রহমান মাসুদ,চান্দিনা।।
কুমিল্লায় ঘুর্ণিঝড় ‘শক্তি’র কবলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭টি উপজেলার বৈদ্যুতিক লাইন। ৮৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। ট্রান্সফরমার বিকল হয়েছে ৬২টি। সাড়ে ৪শ স্থানে বিদ্যুতের তাঁর ছিঁড়ে গেছে। এছাড়াও দুইশতাধিক স্থানে পোল হেলে যাওয়া, শতাধিক স্থানে ক্রস আর্ম ভেঙ্গে, দেড়শতাধিক স্থানে ইনসুলেটর ও ৩ শতাধিক স্থানে মিটার ভেঙ্গে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে। এতে সমিতি গুলোর প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ৪টি সমিতি দাবি করছে। এদিকে ৬০ ঘন্টায়ও শতভাগ বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি সমিতির ৩০ শতাংশ লাইনম্যান আন্দোলন করতে ঢাকায় যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যুৎ সংযোগ মেরামতে হিমশিম খাচ্ছে সমিতিগুলো।
জানা যায়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুতের ৪টি সমিতির অধীনে কুমিল্লা মহানগরীসহ ১৭টি উপজেলা এবং পাশর্^বর্তী ২টি জেলার আরও ২টি উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ করে আসছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে প্রবল বৃষ্টির সাথে ঝড়ো বাতাসে কুমিল্লা জেলার প্রায় সকল উপজেলার বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো জেলা। প্রথম ২৪ ঘন্টায় জেলার ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ লাইন চালু করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। এতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। বিদ্যুতের অভাবে মোবাইল ফোনের চার্জ বন্ধ হয়ে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে চারটি উপজেলায় ২৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে ১৯টি ট্রান্সফরমার বিকল হয় এবং ১৫৫ স্থানে বিদ্যুতের তাঁর ছিড়ে যায়। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় চান্দিনা উপজেলায়। শুধুমাত্র ওই উপজেলায় ৮টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর অধীনে ৬টি উপজেলায় ৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে এবং ১৩টি ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ৬টি উপজেলায় সর্বোচ্চ ৪৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে এবং ১৮টি ট্রান্সফরমার বিকল হয়। ওই সমিতির অধীনে ১৮০টি স্থানে বৈদ্যুতিক তাঁর ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর অধীনে ৩টি উপজেলায় ৯টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে ১২টি ট্রান্সফরমার বিকল হয় এবং ১৭৬টি স্থানে বৈদ্যুতিক তাঁর ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।

inside post

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম জানান- টানা দুই দিন বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোনের চার্জ শেষ হয়ে সকলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফ্রিজে থাকা অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে যায়।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আবু রায়হান জানান- ঘুর্ণিঝড়ে বৈদ্যুতিক লাইন অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই আমাদের লোকজন কাজ করছে। বর্তমানে আমাদের সবগুলো লাইনই চালু আছে। তবে শনিবার বিকেলে বৃষ্টির সাথে আবারও ঝড়ো বাতাসে বেশ কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে। সেগুলোও সমাধানের চেষ্টা করছি। আন্দোলন করতে লাইনম্যান ঢাকায় থাকার প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন- আমরা বহিরাগত লোকজন দিয়ে কাজ চালিয়ে নিয়েছি। যাতে লাইনম্যানদের সংকটে কাজ থেমে না থাকে।

আরো পড়ুন