খালি থাকবে লক্ষাধিক আসন
কুমিল্লা জেলায় আসন ৯২ হাজার- উত্তীর্ণ ৫১ হাজার
মহসীন কবির।।
কুমিল্লা অঞ্চলের কলেজগুলোতে লক্ষাধিক আসন খালি থাকবে। কারণ পাস করা শিক্ষার্থী অনুপাতে কলেজের সংখ্যা বেশি। বোর্ডের আওতাভুক্ত ৬টি জেলায় সরকারি, এমপিওভুক্ত ও অনুমোদনপ্রাপ্ত এই তিন ক্যাটাগরিতে কলেজ রয়েছে ৪৬১টি। এসব কলেজে আসন ২ লাখ ৫৭ হাজার ৪৬০টি। অথচ এবার বোর্ড থেকে উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৬২ জন। এতে আসন খালি থাকতে পারে কমপক্ষে ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৭টি।
সূত্র জানায়,কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশে ভর্তি ফরম পূরণের শেষ দিন ছিলো ১১ জুন। তবে পুনঃনিরীক্ষণে নতুন আরও ৭৮১ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ায় ভর্তির আবেদনের সময়সীমা ১৩ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। ভর্তি চলবে ১৫ থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই। এসএসসিতে এ বছর এ বোর্ডের পাশের হার ছিলো ৭৯.২৩।
বোর্ডে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে আসন রয়েছে ৭২ হাজার ৪৯০টি। এসএসসিতে এ বিভাগে পাশ করেছে ৫৭ হাজার ৫১৯ জন। সে অনুসারে বিজ্ঞানে ফাঁকা থাকবে ১৪ হাজার ৯৭১টি আসন। মানবিকে আসন ৯৫ হাজার ৯৪০। এসএসসিতে পাস করেছে ৩৯ হাজার ৯৭২ জন। মানবিকে আসন ফাঁকা থাকবে ৫৫ হাজার ৯৬৮টি। ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় আসন ৮৯ হাজার ৩০টি। এ বিভাগে এসএসসিতে পাশ করেছে ৪৪ হাজার ৫৯০ জন। মানবিকেও আসন ফাঁকা থাকবে ৪৪ হাজার ৪৪০টি।
এর মধ্যে কুমিল্লা জেলার ১৬৯টি কলেজে একাদশে আসনসংখ্যা ৯২ হাজার ৩৫৫টি। আর এবার এ জেলা থেকে এসএসসি পাস করেছে ৫১ হাজার ৩৯ জন। সে অনুযায়ী জেলায় আসন বেশি রয়েছে ৪১ হাজার ৩১৬টি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৭৫টি কলেজে আসনসংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৬৫। এ বছর এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে ২০ হাজার ৩২৩ জন। আসন বেশি ১৯ হাজার ৪৪২টি। চাঁদপুরের ৭০টি কলেজে আসন ৩৮ হাজার ১৬০। এ বছর এসএসসিতে কৃতকার্য হয়েছেন ২২ হাজার ৬৭৩ জন। এ জেলায় আসন বেশি ১৫ হাজার ৪৮৭ জন। নোয়াখালী জেলার ৬০টি কলেজে আসন রয়েছে ৩৯ হাজার ৩৬০। এসএসসি পাস করেছে ২১ হাজার ৯০৪ জন। আসন বেশি ১৭ হাজার ৪৫৬টি। লক্ষ্মীপুরের ৪৬টি কলেজে আসন ২৫ হাজার ২২০। এসএসসি পাস করেছে ১২ হাজার ৭৮০ জন। আসন বেশি ১২ হাজার ৪৪০টি। ফেনীর ৪১টি কলেজে আসন ২২ হাজার ৬০০। এ বছর এসএসসি পাস করেছে ১৩ হাজার ৩৬২ জন। আসন বেশি ৯ হাজার ২৩৮টি।
তবে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে মোট আসনের বিপরীতে ভর্তিচ্ছু থাকেন দ্বিগুণেরও বেশি শিক্ষার্থী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। কুমিল্লার শীর্ষস্থানীয় এ প্রতিষ্ঠানটিতে একাদশের বিজ্ঞানে আসন রয়েছে ৪৫০। এসএসসিতে এ বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েও এ কলেজে নির্ধারিত আসনের বাইরে চান্স পান না অধিকাংশ শিক্ষার্থী। এ কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৪৫০ ও মানবিকে রয়েছে ৩০০ আসন।
অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান জানান ভিক্টোরিয়ায় সব সময়ই নির্ধারিত আসনের কয়েক গুন আবেদন জমা পড়ে। সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েও এই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে অনেকেই ভর্তির সুযোগ পায় না। তাই আমাদের আসন কখনও খালি থাকে না। অথচ অসংখ্য কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সংকট থাকে।
ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুর রশীদ বলেন, কলেজ বেড়েছে এটি ভালো দিক। তবে গুণগত মানের দিকটিও লক্ষ্য রাখা দরকার। তাহলেই শিক্ষার্থী সংকট হবে না।
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, এসএসসি পাশ করা স্কুল শিক্ষার্থী ছাড়াও মাদ্রাসা ও উন্মুক্ত থেকে উত্তীর্ণ কিছু শিক্ষার্থীও কলেজে ভর্তি হয়ে থাকে। এরপরও শিক্ষার্থী অনুপাতে কলেজ বেশি হওয়ায় লক্ষাধিক আসন খালি থাকবে বলে তিনি জানান।
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. নিজামুল করিম বলেন, শিক্ষার্থী অনুপাতে কলেজ বেশি থাকলেও মানসম্মত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ঠিকই থাকে।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com