আবু সুফিয়ান রাসেল।।
মো. শফিক শিকদার। পেশায় রিকশা চালক। মার্কিন সঙ্গীত শিল্পী মাইকেল জ্যাকশনকে অনুকরণের চেষ্টা। মানুষ তাকে মাইকেল শফিক বলে ডাকেন। কালার মিল রেখে পরেন স্যুট, বুট, টাই, জুতা, বেল্ট, ঘড়ি ও সানগ্লাস। কালার মিল রেখে তার পোষাক আছে ডজন সেট। বাংলা হিন্দি গানে রিকশার যাত্রীদের খুশি রাখেন। যাত্রীরা খুশি হয়ে দেন টাকা উপহার, কেউ তোলেন সেলফি। স্বপ্ন তার ছোট পর্দায় কাজ করা।
জানা যায়, ১৯৯৬ সালে ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসেন শফিক। প্রথমে নগরীর টিক্কাচর এলাকায় বাঙ্গারি মালামাল পরে হোটেল ব্যবসা শুরু করেন। গত এক দশক যাবৎ রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। বিয়ে করেছেন কুমিল্লায়। এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সুজানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। প্রতিবেশী, নগরীর রিকশা চালকসহ রিকশা প্রিয় ভ্রমণ পিপাসুরা মাইকেল শফিক নামেই ডাকেন।
সুজানগর এলাকার বাসিন্দা তৌহিদ হোসেন সরকার জানান, শফিক সিকদার প্রায় ত্রিশ বছর এ এলাকায় থাকে। খুবই মিশুক মানুষ। তাকে আদর করে আমরা মাইকেল শফিক ডাকি। তার পোষাকের কারণে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গানের গলাও ভালো। মানুষ খুশি হয়ে ২০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা, ৫০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দেয়। তবে সে টাকা জমায় না। যা আয় করে, তা খরচ করে। দোকানে বসলে সবাইকে চা নাস্তা করাবে। এটা তার অভ্যাস।
শফিক শিকদার বলেন, মানুষের অনেক সখ থাকে। আমার সখ হলো সুন্দর সুন্দর নতুন জামা কাপড় ক্রয় করা। আমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে চলি। এ অভ্যাস বিয়ের আগ থেকেই। মানুষ আমাকে মাইকেল বলে ডাকলে খুশি হই। নিজের গাড়ি, কোন দেনা নাই। মেয়েটা পড়ে, ছেলে হোটেলে কাজ করে। আমার সুখের সংসার । প্রথম যখন স্যুট, বুট, টাই পরে কুমিল্লা শহরে রিকশা চালাতাম, মানুষ গাড়িতে উঠতো না ভয়ে। মানুষ আমারে ডিবি পুলিশ মনে করতো। প্রথম দুই তিন মাস তেমন ভাড়া পাইনি এ পোষাকের কারণে। এখন আল্লার রহমতে অন্য চালকদের থেকে ভালা টাকা রোজকার করি। আবার খরচ হয়ে যায়। আজ লাল জামা সেট পরছি, কাল দেখবেন সাদা বা কালো।
আমরা ২১ জোড়া জুতা, সাতটি টুপি, সাতটি চশমা, ২৪টি ঘড়ি, কালার মিল রেখে ১৫ সেট গেঞ্জিসহ রং বেরং এর শার্ট প্যন্ট, স্যুট ও অন্যান্য পোষাক। ভাড়ার বিষয়ে মাইকেল বলেন, কখনও আমি ভাড়া নির্ধারণ করে গাড়ি চালাই না। মানুষ খুশি হয়ে যা দেয়। বিয়ের অনুষ্ঠান, ইপিজেডের বড় অনুষ্ঠানে মানুষ আমাকে নিয়ে যায়। ইচ্ছা আছে যদি কোন নাটক, সিনেমায় কমেডি চরিত্র পাই দর্শকদের মন জয় করতে পারবো।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com