অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লার মানুষের খাবারের থালায় আবার উঠবে ৫৪প্রজাতির দেশি মাছ। বর্ণিল,সুস্বাদু ও পুষ্টিকর মাছ কুমিল্লার নদী খালে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তারা।
কুমিল্লা জেলা মৎস্য অফিসের সূত্রমতে, কয়েক বছর আগে কুমিল্লা অঞ্চলে ৫৪টি প্রজাতির দেশি মাছ প্রায় বিলুপ্ত ছিলো। তার মধ্যে ৩৬টি প্রজাতি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ফিরিয়ে আনা মাছ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, পাবদা, গুলশা,টেংরা, কৈ, শিং, মাগুর। এখনও ফিরিয়ে আনা যায়নি কুমিল্লার নদী,খাল ও পুকুর থেকে হারিয়ে যাওয়া ১৮ প্রজাতির দেশি মাছ। হারিয়ে যাওয়া মাছ গুলোর মধ্যে অন্যতম,মহাশোল,নাপতে কৈ,গুতুম,বাতাসী,খলিসা,দারকিনা,বাইলা প্রভৃতি।
লাকসামের চন্দনা এলাকার মাহাবুবুল আলম খসরু বলেন, খালে বিলে একসময় প্রচুর দেশি মাছ পাওয়া যেত। জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার ও পানি স্বল্পতার কারণে এখন আর মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় হারিয়ে গেছে,কাচকি,রঙিন টেম্বুইচা,খৈয়া,ছোট চান্দা ও দেশি চিংড়ি মাছ।
জেলার শ্রেষ্ঠ মৎস্যচাষি আলী আহমেদ মিয়াজী বলেন, খালে-বিলে পানির প্রবাহ না থাকায় ছোট প্রজাতির মাছের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। পুকুরে ও জমিতে কীটনাশক দেয়ায় মাছের ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা বাইম,টেংরা ও টাকিসহ বিভিন্ন দেশি ছোট মাছ সংরক্ষণ করি। পানি বাড়লে তাদের দাউদকান্দির প্লাবনভূমিতে অবমুক্ত করি।
কুমিল্লার মেডিসিন ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম শাহজাহান বলেন, ছোট মাছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়োডিন ও ভিটামিন থাকে। যা চোখ ভালো রাখে এবং দেহগঠনে সহায়তা করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। ফুসফুসের প্রদাহ কমায় এবং দাঁত ও হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে।
কুমিল্লা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন বলেন, কয়েক বছর আগে কুমিল্লা অঞ্চলে ৫৪টি প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত ছিলো। তার মধ্যে ৩৬টি প্রজাতি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ না ধরে প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণ করতে হয়। ছোট মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ, জেলে পরিবারগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ে মাছ ধরার পরিবর্তে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সমন্বিত বালাইনাশক প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ ও কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমানোর মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষা করা সম্ভব।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com