কুমিল্লায় সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে টাকা ও স্বর্ণ লুটের মামলা
অফিস রিপোর্টার।।
আসামি আটক করার নামে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চান্দলা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী সালমা আক্তার বাদী হয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলি আদালতে ৭ পুলিশের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে বিচারক বেগম মিথিলা জাহান নিপা জেলা পুলিশ সুপারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন৷ এছাড়াও আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আসামিরা হলেন, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই (নিরস্ত্র) সাইফুল ইসলাম(৩৫), এএসআই কৃষ্ণ সরকার (৩৫), এসআই জীবন কৃষ্ণ মজুমদার (৩২), এসআই কামাল হোসেন (৩৫), এএসআই মতিউর রহমান (৩৮) এবং পুলিশ সদস্য নুরুজ্জামান (৩০) ও জামাল হোসেন (৩৫)। এই মামলায় আরও ১০ জন পুলিশ সদস্যকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্প্রতিবার মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী গৃহবধূ সালমা আক্তার জানান, গত ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় তার ভাই লোকমান হোসেনের খোঁজে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ সদস্য তাদের বাড়িতে আসেন। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা সবাই ব্রাহ্মণপাড়া থানার পুলিশ সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। ঘরে প্রবেশ করে পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলাম, কৃষ্ণ সরকার, নুরুজ্জামান ও জামাল হোসেন বিভিন্ন রুম তল্লাশি শুরু করেন। কোন মামলায় ওয়ারেন্টের আদেশ আছে কিনা জানতে চাইলে কৃষ্ণ সরকার গালাগাল করে লাঠি দিয়ে শোকেসের গ্লাস ভেঙে ফেলেন। আলমিরার চাবি নিয়ে তল্লাশির নামে ড্রয়ারে থাকা ব্যবসার জন্য রাখা নগদ দুই লাখ টাকা এবং দুই জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, দুইটি চেইন ও তিনটি আংটিসহ ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং মোবাইল ফোন লুট করে।
সালমা আক্তার বলেন, তিনি চিৎকার করলে পাশের বাড়িতে থাকা তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খান ও স্বামী আবুল কালাম আজাদ এগিয়ে আসেন। এসময় পুলিশের সাথে তার বাবা ও স্বামীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় পুলিশের অন্য সদস্যরা তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খান ও স্বামী আবুল কালাম আজাদকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। বীরমুক্তিযোদ্ধা জামাল খান এখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গত বুধবার তিনি এবিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি অপ্পেলা রাজু নাহা জানান, সালমা আক্তারের ভাই লোকমান হোসেন ডাকাতিসহ ৯টি মামলার আসামি। পলাতক থাকায় পুলিশ সাদা পোশাকে আসামি লোকমান হোসেনকে গ্রেফতারের জন্য সালমা আক্তারের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। ওই সময় সালমা আক্তার, তার স্বামী আবুল কালাম আজাদসহ স্থানীয় কিছু ব্যক্তি পুলিশের উপর চড়াও হয়। ওরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশ সদস্যরা তার স্বামী আবুল কালাম আজাদকে আটক করে এমনকি পরবর্তীতে কুমিল্লা থেকে অভিযান চালিয়ে লোকমান হোসেনকেও গ্রেফতার করে।
অভিযোগ তদন্তের বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ বলেন, আমরা আদালতের নির্দেশনা পেয়েছি। আমরা অভিযোগটি তদন্ত করছি।