কুমিল্লায় সাড়ে ছয় লাখ টাকার কাজ ১৬০ টাকায় সম্পন্ন!

 

মাহফুজ নান্টু।
পাওয়ার গ্রিড উপকেন্দ্রের মেশিন মেরামতে সাফল্য দেখিয়েছে কুমিল্লায় কর্মরত প্রকৌশলীরা। মেশিনটি মেরামতে সাড়ে ছয় লাখ টাকা খরচ হতো। সেখানে বাংলাদেশী প্রকৌশলীরা ১৬০ টাকা ব্যয়ে সচল করেছেন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের ডিসি কন্ট্রোল সিস্টেম। এ নিয়ে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি কুমিল্লার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিঠি দিয়ে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির প্রধান নির্বাহী প্রবীর কান্তি দাশ।

সূত্র জানায়, কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার দেবপুরে অবস্থিত ২৩০/১৩২/১৩৩ (উঃ) গ্রিড উপকেন্দ্রেটি। এই উপকেন্দ্রে থেকে চট্টগ্রাম বিভাগে সবকটি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্রটি থেকে মাইক্রো কন্ট্রোলার বেইজড, ব্যাটারি চার্জারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। গত ৭ অক্টোবর গ্রিড উপকেন্দ্রের ২২০ ভি ডিসি সিস্টেমটি বিকল হয়ে যায়। এটি ক্রয় করা হয়েছিলো সিঙ্গাপুরের এ ই জি কোম্পানি থেকে। সিঙ্গাপুরের ওই কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ব্যাটারি মেরামত করতে সাড়ে তিন হাজার ডলার লাগবে। যা বাংলাদেশী টাকায় তিন লাখ ৪৯ হাজার ৪০০ টাকা। সম্মানি নিবে প্রায় তিন লাখ টাকা। তবে কুমিল্লায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির প্রকৌশলীরা নিজেরা টানা তিন দিন ধরে চেষ্টা করেন। অবশেষে ডিসি ২২০ ভি ডিসি সিস্টেমটি সচল করেন।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, বিদ্যুৎ মাইক্রো কন্ট্রোলার বেইজড ব্যাটারি চার্জারটি হলো উপকেন্দ্রটির প্রাণ। গত ৭ অক্টেবর মাইক্রো কন্ট্রোলার বেইজড ব্যাটারি অস্বাভাবিক কাজ করছিলো। এ পাওয়ার স্টেশন থেকে পুরো চট্টগ্রাম বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। বিকল্প মেশিন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছিল। বিকল হয়ে যাওয়া মেশিনটি কেনা হয়েছিলো সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানি থেকে। প্রত্যেকটা মেশিনের ম্যানুফেকচারিংয়ে লেখা থাকে কিভাবে মেশিনটি পরিচালনা করা হবে। আমাদের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের মেশিনটির যে স্থানে সমস্যা হয় তা কিভাবে মেরামত করতে হবে ম্যানুফেকচারিংয়ে সে বিষয়টি উল্লেখ ছিলো না। সিঙ্গাপুরের ওই কোম্পানি মেরামত ফি ও সম্মানি বাবদ প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা চেয়েছে। আমরা রাজি হয়নি। টানা তিন দিন গবেষণা – পর্যালোচনা করে ১৬০ টাকা ব্যয় করে রেজিস্টর ক্রয় করে মেশিনটি সচল করি। মেরামতের পরে আজ একমাস পাঁচদিন মেশিনটি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যাচ্ছে। এজন্য নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহাবুদ্দিন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী বেলাল হোসেন, উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী একেএম রেজাউল করিম ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ বশির উদ্দিনসহ উপকেন্দ্রের কারিগরি কর্মচারীরা ভূমিকা পালন করেছে।