গর্ত-জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত কুমিল্লা নগরীর ৩ প্রবেশপথ


সাইফুল ইসলাম সুমন/আল-আমিন কিবরিয়া।।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে যুক্ত কুমিল্লা নগরীর তিনটি প্রধান প্রবেশপথ দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। বড় বড় গর্ত, জলাবদ্ধতা ও কর্দমাক্ত সড়কে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী ও পথচারীকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি যেমন বেড়েছে, তেমনি শহরের ভাবমূর্তিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কুমিল্লা শহরে প্রবেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হলো, শাসনগাছা-আলেখারচর সড়ক, টমছমব্রিজ-কোটবাড়ি সড়ক এবং ধর্মপুর-জাগুরঝুলি সড়ক। এর মধ্যে শাসনগাছা-আলেখারচর সড়ক দিয়ে বাস চলাচল হওয়ায় এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু এ সড়কের দূর্গাপুর এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটারজুড়ে বিশাল গর্তের কারণে যান চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বর্ষায় এসব গর্তে পানি জমে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা ও অটোরিকশা চলাচলে মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়েছে।
ধর্মপুর-জাগুরঝুলি সড়কও একই অবস্থায় পড়েছে। সাতোরা এলাকায় বড় গর্ত, কাদা ও পানি মিশে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। এই পথে মূলত বিসিক শিল্পনগরীর ট্রাক ও কান্দিরপাড়গামী সিএনজি, অটোরিকশা চলাচল করে।
অটোরিকশা চালক সেলিম মিয়া বলেন, প্রতিদিন গাড়ি মেরামতে আয়ের থেকেও বেশি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। কাদা ও পানির মধ্যে গর্ত এড়িয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেক সময় যাত্রী পড়ে যায়।
ট্রাকচালক মো. ইউসুফ আলী বলেন, পানি থাকার কারণে কোথায় গর্ত আর কোথায় সমান সেটা বুঝা যায় না। ফলে আমরা দূর্ঘটনার স্বীকার হই।
এদিকে টমছমব্রিজ-কোটবাড়ি সড়কেও দৌলতপুর, দিদার মার্কেট ও ধনপুর এলাকায় একই ভগ্নদশা। গর্তে ভরা রাস্তায় ছোট গাড়ি চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এমনকি পায়ে হাঁটাও কষ্টকর।
ধনপুর এলাকার আবু বকর বলেন, প্রতিদিনই দূর্ঘটনা ঘটছে। শুক্রবারে একটি অটোরিকশা উল্টে এক মহিলার পা ভেঙ্গে গেছে।
ইপিজেডে কর্মরত মো. শিবলী সাকিল বলেন, রাস্তায় পানি ও কাদা জমে থাকার কারণে যানবাহনের গতি কমিয়ে চালাতে হচ্ছে, এতে সময় নষ্ট হচ্ছে এবং পণ্য পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, শহরের প্রবেশপথ হিসেবে এই সড়কগুলোই প্রথম চোখে পড়ে। কিন্তু এত খারাপ রাস্তা দেখে মনে হয় না এটা কুমিল্লা শহরে ঢোকার রাস্তা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, শাসনগাছা-আলেখারচর সড়ক সংস্কারের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগের জটিলতায় গত এক বছরে কাজ শুরু করা যায়নি।
তিনি আরো জানান, বৃষ্টির কারণে টমছমব্রিজ-কোটবাড়ি সড়কটি রিফায়ারিং করা যাচ্ছে না। তবে আপাতত গর্তে ইট ফেলে চলাচল স্বাভাবিকের চেষ্টা চলছে। শিগগিরই ধর্মপুর-জাগুরঝুলি সড়ক সংস্কারেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।