গোমতীরপাড়ে ময়লার ভাগাড় !

মাহফুজ নান্টু।

পাড়জুড়ে ময়লার স্তূপ। সেখানে ধিকি ধিকি জ্বলছে আগুন। ভাগাড়ের ময়লার দুর্গন্ধ ও ধোয়ায় পথচারীদের জীবন ওষ্ঠাগত। এমন অবস্থা কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পালপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন গোমতী নদীরপাড় জুড়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা শাসনগাছা-বুড়িচং সড়কের পালপাড়া ব্রিজ। গোমতী নদীর এই অংশের দক্ষিণপাড়ে ব্রিজের গোড়ায় স্তুপ আকারে রাখা হচ্ছে ময়লা। ময়লা ছড়িয়ে পড়ছে নদী ও চরে। পচা-বাসি ফলের খোসা, প্লাস্টিক-পলিথিনে সয়লাব ভাগাড়। তাতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আগুন জ্বলতে থাকে। ময়লার দুর্গন্ধের সাথে আগুনের ধোয়া মিলে তৈরি হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। নাকে রুমাল চেপে ধরে রাখলেও উৎকট গন্ধ থেকে রেহাই পাচ্ছে না পথচারী ও যাত্রীরা।

সড়কটি দিয়ে নিয়মিত সাইক্লিং করেন মাহমুদুল হাসান ইফাজ। তিনি বলেন, একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও গোমতীপাড়জুড়ে এমন ময়লার বাগাড় কেমনে সৃষ্টি হয় তা আমার বোধগম্য নয়। ধোয়া আর দুর্গন্ধের মধ্যে দিয়েই আমাদের সবার সকাল শুরু হয়-রাত কাটে। আমরা এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চাই।

রিকশা চালক শফিক মিয়া বলেন, পত্তিদিন সহালে আর রাইতে গাড়ি দিয়ে মইলা হালাইয়া যায়। কেউ কিচ্চু কয় না। আমডা দেইখ্খাও কিছু কইতাম পারি না। আমডা হইলাম রিসকাওয়ালা। আমডা ডাক দিলে মারতে আইবো।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত এক বছর ধরে গোমতী নদীর পালপাড়া ব্রিজের পাশে ময়লা ফেলা শুরু হয়েছে। কুমিল্লা নগরী থেকে ময়লা আবর্জনা এনে এখানে ফেলা হয়। পাশাপাশি আশেপাশের এলাকার ময়লাও এখানে রাখা হয়। এছাড়াও গোমতীনদীর কাপ্তানবাজার এলাকাতেও নগরীর ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা হয়।

এখন শুস্ক মরসুম। পুকুর জলাশয়ের পানি কমে এসেছে। গোছলসহ দৈনন্দিন কাজে গোমতী নদীর এই অংশটি ব্যবহার করে আড়াইওড়া এলাকার নমঃশুদ্র পাড়ার সহস্রাধিক বাসিন্দা।

নমঃশুদ্র পাড়ার বাসিন্দা নারায়ন, বাদল রায়সহ অন্তত ১০ জন বাসিন্দা বলেন, তারা গরীব মানুষ। এলাকায় ডিপটিউবওয়েল নেই। পানির জন্য গোমতীনদীতেই আসতে হয়। গত এক বছর ধরে গোমতীনদীর পালপাড়া ব্রিজের দক্ষিণ পাশের ভাগাড় থেকে ময়লা গিয়ে নদীতে পড়ে। বাধ্য হয়ে এই দূষিত পানি তারা ব্যবহার করতে হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিয়া আফরিন জানান, বিষয়টি জানা ছিলো না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।