গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও কো-অপারেটিভ কর্মকর্তা
অফিস রিপোর্টার।।
গ্রাহকদের সঞ্চিত প্রায় দুই কোটি টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লিমিটেড কুমিল্লা জাফরগঞ্জ শাখার কর্মকর্তা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন টাকা জমা রাখা গ্রাহকরা। অভিযুক্ত ঐ কর্মকর্তা আবদুস সাত্তারের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মুগসাইর গ্রামে। কুমিল্লা জাফরগঞ্জ শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হতো দেবিদ্বার উপজেলার এগারগ্রাম বাজার থেকে। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা, গ্রাহকের কাছ থেকে ফিক্সড ডিপোজিট ও ডিপিএস নামে টাকা গ্রহণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। দুই বছর আগে এগারগ্রাম বাজারে প্রতিষ্ঠিত হওয়া শাখাটি বন্ধ রয়েছে তিনদিন যাবৎ। কর্মকর্তা আবদুস সাত্তার পরিবার নিয়ে পলাতক রয়েছেন। এমনি করে এক থেকে দশ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা রেখে প্রতারিত হয়েছেন ৬০ জন গ্রাহক।
স্থানীয় বিধবা খোসনেয়ারা বেগম বলেন, একমাত্র সন্তান নিয়ে তিনি জীবন যাপন করছেন। শেষ সম্বল জমানো দুই লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন ঐ কর্মকর্তার নিকট। টাকা হারিয়ে এখন তিনি পাগল প্রায়।
পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুগসাইর গ্রামের তাজুল ইসলাম বলেন, পেনশনের দুই লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন প্রতিষ্ঠানটিতে। পেনশনের জমানো টাকা হারিয়ে তিনি এখন বাকরুদ্ধ। বিশ^াস করে টাকা জমা রেখেছিলেন। এভাবে প্রতারিত হবেন বুঝতে পারেননি।
এগারগ্রাম বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী আবদুল কাদিও বলেন, তিনি দুই নামে দশ লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ বিশ^াস করে টাকা জমা রেখেছে। তিনিও রেখেছেন, এখন মানুষকে নিঃস্ব করে সে পালিয়ে গেছে।
মুগসাইর এগারগ্রামের শারমিন আক্তার বলেন, সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিল তিল করে জমানো সাড়ে তিন লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন। সাইনবোর্ডে ব্যাংক লেখা দেখে টাকা জমা রেখেছিলেন। এটি যে ধোকা তিনি বুঝেননি।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত আবদুস সাত্তারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. আল-আমিন বলেন, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লিমিটেডের ব্যাংকিং কার্যক্রম নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। তারপরেও তারা রিটের পর কার্যক্রম পরিচালনা করে। কুমিল্লা জেলায় তাদের ৪টি শাখা রয়েছে। গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্থ হলে আমাদের বরাবর আবেদন করবেন। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লিমিটেড কথিত ব্যাংকটি জাফরগঞ্জ শাখা হিসেবে কুমিল্লা জাফরগঞ্জে পরিচালিত হতো। পরবর্তীতে দেবিদ্বার এগারগ্রাম বাজারে সেটি স্থানান্তরিত হয়ে জাফরগঞ্জ শাখা হিসেবেই পরিচালিত হতে থাকে। কিন্তু গ্রাহকদের রসিদে এগারগ্রাম বাজার শাখা হিসেবে সিল মারা হতো।