আমোদ ডেস্ক।।
[caption id="attachment_1148" align="aligncenter" width="646"] বিজ্ঞাপন[/caption]
করোনাভাইরাসের কারণে পুরো দেশের মতো কুমিল্লাতেও থমকে গিয়েছিল পর্যটন খাত। দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস বন্ধ ছিল জেলার সব ঘুরে বেড়ানোর জায়গা। পর্যটন নগরী খ্যাত কোটবাড়িতে ছিল শুনশান নীরবতা। দীর্ঘ সময় ধরে জেলার পর্যটন খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ছিল প্রায় শূন্য। পাশাপাশি চরম ক্ষতির মুখে পড়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন পার্কগুলো।
[caption id="attachment_1154" align="aligncenter" width="1015"] বিজ্ঞাপন[/caption]
তবে, এখন করোনার ক্ষত কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কুমিল্লার সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ব্যক্তিমালিকানাধীন পার্কগুলো। প্রাণ ফিরেছে জেলার পর্যটন শিল্পে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নানা বয়সী পর্যটকের কোলাহলে মুখরিত ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর এলাকা। পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পার্কগুলোতেও ঘুরতে আসছেন দর্শনার্থীরা। প্রাণচাঞ্চল্যময় হয়ে উঠেছে কোটবাড়ি এলাকার ঐতিহ্যবাহী লালমাই পাহাড় ঘিরে থাকা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও পার্কগুলো। কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
[caption id="attachment_1158" align="aligncenter" width="1019"] বিজ্ঞাপন[/caption]
সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে গত ১৭ মার্চ থেকে জেলার পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। দীর্ঘ বিরতির পর ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্কগুলো খুলতে শুরু করে। তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে বন্ধ ছিল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো। অবশেষে অধিদপ্তরের নির্দেশনা পাওয়ায় ১৬ সেপ্টেম্বর সেগুলোও খুলে দেয়া হয়।
চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই দলে দলে দর্শনার্থীরা জেলার ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশনগুলো ঘুরে দেখেছেন। শালবন বৌদ্ধ বিহার, ময়নামতি জাদুঘর, রূপবান মুড়া, ইটাখোলা মুড়াসহ জেলার সব প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন এখন প্রাণচাঞ্চল্যময় হয়ে উঠেছে।
[caption id="attachment_1164" align="aligncenter" width="1015"] বিজ্ঞাপন[/caption]
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয় সূত্র জানায়, কুমিল্লার লালমাই ও ময়নামতি পাহাড় এলাকায় অন্তত ২৩টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উন্মোচিত হওয়া ১২টির মধ্যে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর থেকে সরকার রাজস্ব আয় করছে। অন্যগুলো এখনও বিনা খরচে দেখতে পারছেন পর্যটকরা।
শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর থেকে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছিল ১ কোটি ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮১৫ টাকা। আর করোনা মহামারির আগে চলতি বছরের আড়াই মাসে (১৬ মার্চ পর্যন্ত) সরকারের রাজস্ব আয় হয় ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৫৪০ টাকা। এরপর থেকে দীর্ঘ ৬ মাস এখান থেকে কোনো রাজস্ব আয় হয়নি।
শালবন বিহারে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, আবুল বাশারসহ বেশ কয়েকজন বলেন, করোনার কারণে সবকিছু থমকে গিয়েছিল। এখন আবার ধীরে ধীরে প্রাণচাঞ্চল্যময় হয়ে উঠছে জেলার পর্যটন স্থানগুলো।
[caption id="attachment_1464" align="aligncenter" width="1013"] বিজ্ঞাপন[/caption]
কোটবাড়ি এলাকার সালমানপুরে অবস্থিত ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক, কুমিল্লা নগরীর ঢুলিপাড়া এলাকার ফান টাউন পার্কসহ বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন পার্কগুলোর উদ্যোক্তারা জানান, ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পার্কগুলোর মালিকদের প্রায় সবারই ব্যাংকঋণ রয়েছে। করোনার কারণে সব তছনছ হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন সবকিছু আবার চালু হয়েছে নতুন করে। এখন সবাই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।
ময়নামতি জাদুঘর এলাকার খুদে ব্যবসায়ী আবদুস সালাম বলেন, ‘৬ মাস আগেও শালবন বিহারের সামনে আমার খাবার হোটেলের দোকান ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সব হারিয়েছি। তবে হাল ছাড়িনি, এখন ফুচকা ও চটপটির ব্যবসা শুরু করেছি। আশা করছি সব কিছু ঠিক থাকলে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
আরেক খুদে ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘদিন আমার কুটির শিল্পের দোকানটি বন্ধ ছিল। পরিবার নিয়ে মানবেতর দিন কাটিয়েছি। এখন আবার নতুন স্বপ্ন নিয়ে সব কিছু শুরু করেছি। গত কয়েক দিন ধরে বিক্রিও ভালো হচ্ছে।’
[caption id="attachment_1146" align="aligncenter" width="1012"] বিজ্ঞাপন[/caption]
স্থানীয় ভিক্টোরি ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদ পাটোয়ারি বলেন, ‘ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জেলা কুমিল্লার পর্যটন অনেক আগ থেকেই সমৃদ্ধ। কুমিল্লার পর্যটন স্পটগুলো থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেয়ে থাকে। সবাইকে সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এরই মধ্যে কুমিল্লার সরকারি-বেসরকারি পর্যটন খাতগুলো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।’
[caption id="attachment_1165" align="aligncenter" width="1013"] বিজ্ঞাপন[/caption]
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক (কুমিল্লা কার্যালয়) ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে আমরা সাময়িকভাবে থেমে গিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবারও সবকিছু চালু হয়েছে। শুরুর দিন থেকেই দর্শনার্থীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পর্যটকদের সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের মতো হয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস এর মাধ্যমেই কুমিল্লার সরকারি-বেসরকারি পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাই ঘুরে দাঁড়াবে।’
[caption id="attachment_1458" align="aligncenter" width="1016"] বিজ্ঞাপন[/caption]
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com