#ভুতুড়ে বিল কিস্তিতে দিতে বলছেন কর্মকর্তারা
সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম।।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চৌদ্দগ্রাম এর গ্রাহক মুন্সীরহাট ইউনিয়নের যুগীরহাট গ্রামের শাহ আলমের জুলাই মাসের বিল ৬৪৮ টাকা, আগস্টের বিল চলতি মাসে হাতে পেয়েছেন যা ৯২৭৩০ টাকার। এক মাসের ব্যবধানে এই অস্বাভাবিক বিল হাতে পেয়ে হতবাক তিনি।
রোববার এমন ভুতুড়ে বিল নিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চৌদ্দগ্রাম অফিসে হাজির হন বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক গ্রাহক। ক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা জানতে চান কারণ। প্রতিকার চেয়ে ঘুরেছেন কর্মকর্তাদের টেবিলে টেবিলে। তবে বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা এসব ভুতুড়ে বিলের জন্য গ্রাহকদের দায়ী করে বলছেন কিস্তিতে বিল পরিশোধ করতে। আবার অনেক গ্রাহকের ব্বিলে হিসেব কষে লিখে দিয়েছেন ছাড়।
উপস্থিত ভুক্তভোগী গ্রাহকদের একজন চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার শ্রীপুর গ্রামের পেয়ারা বেগম। অসুস্থ স্বামী ফজল মিয়া শয্যাশায়ী। ভিক্ষে করে চালানো সংসারে ৩লাইট ও দুই ফ্যান। সংসার পেয়ারা বেগমের। তাতে গত মাসের বিল এসেছে ৮৪৩৪ টাকা। তিনি বললেন, কার্ড মিটার লাগানোর পর প্রথম মাসে বিল এসেছে ২৬৬১ টাকা। আগে প্রতি মাসে গড়ে ৮০০/৯০০ টাকা বিল আসতো। এই ভিতুড়ে বিল নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে গেলে তারা সমাধানের আশ্বাসে তারা বিদ্যুৎ বিলটি রেখে দেয়।
পৌরসভার বৈদ্দেরখিলের বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী উর্মি বললেন, প্রতিমাসে বিল আসে ১০০০/১২০০ টাকা। এই মাসে বিল পেয়েছি ৫২১৩৯ টাকা।
জুগিরহাট গ্রামের খোরশেদ আলমের বলেন, আমি নিয়মিত বিল পরিশোধ করি। আগেপরে কোনো বকেয়া নেই আমার। গত মাসে বিল দিয়েছে ১৪০৪ টাকা, এই মাসে দিয়েছে ২১৯০১ টাকা। এখন কীভাবে এই বিল দিবেন জানেন না এই কৃষক।
পৌরসভার পূর্ব চান্দিশকরা গ্রামের মমিনুল ইসলামের জুলাই মাসের বিল ১৫৬২ টাকা, আগস্টের বিল হাতে পেয়েছেন ১৩৮৪৩ টাকার। এমন অবিশ্বাস্য বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে এসেছেন এই গ্রাহক। এখন কর্মকর্তারা বলছে মাসে ৪০০০ টাকা কিস্তিতে বিল দিতে।
অবশ্য বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা একে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করেন। শেষে সব দায় চাপিয়েছেন মিটার রিডারদের উপর। তবে অফিসে খুঁজে পাওয়া যায়নি কোনো মিটার রিডারকে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চৌদ্দগ্রাম বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের সহ: আবাসিক প্রকৌশলী মো: ওয়াহিদুর রহমানও দায় চাপাচ্ছেন মিটার রিডারদের উপর। তিনি বলেন,'মিটার রিডাররা গ্রাহকদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সঠিক বিল না করে কম বিল করেছে। আবার স্ব-শরীরে গিয়ে মিটার না দেখে অফিসে বা বাসায় বসে ইচ্ছেমতো বিল করেছে। যার ফলে মিটারে অনেক বকেয়া জমা পড়েছে। বর্তমানে সরকারের নির্দেশনায় কার্ড মিটার প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে পুরনো মিটারে ইউনিট জমা পাচ্ছি। মিটারটা ক্লোজিং করতে গিয়ে একসাথে বকেয়া বিল চলে আসছে। আমরা গ্রাহকদের এসব বিল কিস্তি আকারে দিতে বলছি। সংশ্লিষ্ট মিটার রিডারদেরকে বরখাস্ত করা হবে। এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com