সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম ।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বোরো মৌসুমের পাকা ধানে সোনালী রূপ ধারণ করেছে। কিন্তু শ্রমিক সংকটে পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। আবহাওয়া অফিসের বৃষ্টির পূর্বাভাসে উদ্বিগ্ন কৃষকরা পাচ্ছেন না উপায়ান্তর। এ সুযোগে মৌসুমী শ্রমিকরা দ্বিগুণ বাড়িয়েছেন দৈনিক মজুরি। দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে আসা মৌসুমি শ্রমিক সংকটে বিলম্বিত হচ্ছে পাকা ধান কাটা।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১২ হাজার ৪৬৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে আসা মৌসুমি শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল উপজেলার কৃষকরা। উপজেলায় কৃষি কাজের জন্য শ্রমিকের বড় বাজার সদর দক্ষিণের শুয়াগাজি বাজার। চলতি মৌসুমে সেখানেও রয়েছে শ্রমিক সংকট। এর প্রভাব পড়েছে আশপাশের এলাকাগুলোতে। দ্বিগুন হয়েছে দৈনিক মজুরী। এতে বেড়ে গেছে উৎপাদন ব্যয়।
মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ফেলনা গ্রামের কৃষক মোর্তুজা বলেন, ধান পেকেছে আরো সপ্তাহ খানেক আগে কিন্তু তা কেটে বাড়িতে আনার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছেনা। গতবছর চুক্তিভিত্তিক প্রতি বিঘা ৪ হাজারে কাটাতে পারলেও এবার দ্বিগুন অর্ত্থ দাবী করছেন শ্রমিকরা।
আরেক কৃষক কনকাপৈত ইউনিয়নের মাসকরা গ্রামের মোস্তমা মিয়া বলেন, স্থানীয় একতা বাজারে ৫০০-৬০০ টাকায় শ্রমিক পাওয়া যেত। এবার ধান কাটা মৌসুমের শুরুতে স্থানীয় ওই বাজারে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছেনা। দুই চারজন মিললেও তারা ১০০০-১২০০ টাকা মজুরি দাবি করছেন। এত চড়া মজুরিতে ধান কেটে ঘরে তুললে লোকসান গুনতে হবে বলে জানান এই কৃষক।
বাতিসা ইউনিয়নের চাঁন্দকরা গ্রামের কৃষক আবদুল খালেক বলেন, শ্রমিক পাচ্ছিনা; পেলেও দ্বিগুন টাকা চায়।তাই বাধ্য হয়ে নিজের স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে সাথে নিয়ে তীব্র রোদের মধ্যে নিজেরাই ধান কাটছি।
তবে শ্রমিক সংকটের জন্য বাড়তি বাস ভাড়াকে দায়ী করছেন রংপুরের আদিতমারি থেকে উপজেলার একতা বাজারা আসা মৌসুমি শ্রমিক এরশাদুল, সিরাজুল, জাহিদুল। তারা বলছেন আদিতমারি থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত বাস ভাড়া নিচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। আর দৈনন্দিন সাংসারিক খরচের ব্যয়ও বেশি। তাই ১ হাজারের কম মজুরি আমাদেরকে পোষায়না। অবশ্য শ্রমিক জাহিদুল বলছেন এখন দিন বড়, এত বড় দিনে ১ হাজার টাকার বেশি মজুরি না দিলে আমাদের লস হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জুবায়ের আহমেদ বলেন, 'শ্রমিক সংকটের কথা শুনেছি। এখন পর্যন্ত মোট বোরো আবাদের ৩% কাটা হয়েছে। উপজেলায় খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের ভর্তূকীতে দেয়া হারভেস্টরে ধান কাটা যাবে। কোনো কৃষক যদি হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটাতে চায় তাহলে আমাদেরকে আগে জানাতে হবে। আমরা হারভেস্টরে ধান কাটার ব্যবস্থা করে দিব।'
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com