ছাত্রলীগের ভয়ে কার্যালয়ে যান না ইউপি চেয়ারম্যান!

 

 

 

আমোদ রিপোর্টার।।

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদ(ইউপি) বিভাজনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে অফিস করেন না ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ সেলিম প্রধান। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার ভয়ে তিনি কার্যালয়ে যান না বলে দাবি চেয়ারম্যান সমর্থকদের।

ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে দীর্ঘ প্রায় এক মাস ধরেই চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলছে। ইউপি সচিব অফিস করলেও সময়মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সনদ পায় না ইউনিয়নবাসী। এছাড়া বিদেশগামীরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম বলেন-’২৯ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের বিভাজন নিয়ে একটি সভা ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। চেয়ারম্যানের বক্তব্য চলাকালে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ খান সেন্টু বাধা দেন। এতে চেয়ারম্যান পক্ষের সাথে সেন্টুর লোকজনের সংঘর্ষ হয়। দফাদার ও গ্রাম পুলিশসহ আমরা চেয়ারম্যানকে ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের একটি কক্ষে রেখে দরজা বন্ধ করে দেই। তারা দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। দফাদারসহ পাঁচজনকে মেরে রক্তাক্ত করে। চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করে। এরপর থেকে চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে আসতে পারছেন না।’

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. রৌশন আলী বলেন- ‘সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেয়। এই এলাকায় শান্তি চাই।’

ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বাবুল বলেন, ’ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু নেতা বদরপুর বাজারে সশস্ত্র মহড়া দেয়। আমার উপরও তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। বাজারের ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কে রয়েছে।’

ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ খান সেন্টু বলেন- ’চেয়ারম্যান সাহেব বক্তৃতায় আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তি করেন। আমি বাধা দিলে তার লোকজন আমার উপর হামলা চালায়। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে। তিনি জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদে অফিস করবেন এটাই স্বাভাবিক। আমি আমার উপর হামলার বিচার চাই।’

 

এব্যাপারে মাইজখার ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি জাহিদ হাসান জয় বলেন- ’আমরা ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে সন্ত্রাসী নিয়ে মহড়া দেই বলে যে অভিযোগ তারা তুলেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল সাহেবকে শ্রদ্ধা করি, তার উপর হামলার পরিকল্পনার কথাটি বানোয়াট।’

মাইজখার ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ সেলিম প্রধান বলেন- ’২৯ সেপ্টেম্বরের আমার উপর হামলা হয়। আমার কয়েকজন সমর্থকদের মারধর করে। অফিস, চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। আমার ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর করে। সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে মহড়া দেয়। আমি জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছি। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদে অফিস করতে পারছি না।’
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন- ‘সংঘর্ষের ঘটনা আমি জানি। চেয়ারম্যান অফিসে যায় না এ বিষয়টি মাত্র শুনলাম। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’