ছয় দশক পরেও সংকটে ভিক্টোরিয়ার নজরুল হল
আবু সুফিয়ান রাসেল।।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের কবি নজরুল ইসলাম হল। কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্রদের জন্য একমাত্র ছাত্রাবাস । চারশ’ শয্যার তিন তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবনটি জরাজীর্ণ, স্যাঁতসেঁতে। পুরাতন এ ভবনটির প্রায় দরজা, জানালা ভাঙা। কলেজের ছাত্রের তুলনায় হলের শয্যা সংখ্যা অপ্রতুল। ছাত্রদের নিরাপত্তয় নেই সিসি ক্যামেরা। দ্রুত হলের সংস্কার ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন ছাত্ররা।
সূত্রমতে, শহরতলীর ধর্মপুরে ডিগ্রি শাখার ছাত্রদের জন্য ডিগ্রি কলেজ ছাত্রাবাস নামে ১৯৬০ সালে আবাসিক ভবন তৈরি করা হয়। একই বছর ডিগ্রি শাখার কলা ভবন তৈরি করা হয়। ১৯৬২-৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি শাখা বিভক্ত করা হয়। ১৯৬৯ সালে যার নামকরণ করা হয় কবি নজরুল ইসলাম হল। সাহিত্যকর্মের নানা নামে এ ছাত্রাবাসের কার্যালয়ের নাম গীতাঞ্জলি, অতিথি ভবনের নাম কল্যাণী, খেয়া, বনলতা সেন, রাখালী ও অগ্নিবীণা রাখা হয়েছে। এ কক্ষগুলোতে কলেজের অতিথি, ব্যবহারিক ও ভাইবা নিতে আসা পরীক্ষকগণের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ২০০৪ সালে অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আশরাফুল ইসলামের সময়ে ছাত্রাবাসে গ্রন্থাগার তৈরি করা হয়েছে। রয়েছে সংবাদপত্র পাঠের পৃথক কক্ষ।
বাংলা বিভাগ ছাত্রলীগ সভাপতি ও নজরুল হলের বাসিন্দা রুবেল আহমেদ শুকরিয়া জানান, ৬০ বছর পুরানো এ ভবনটি প্রায় জরাজীর্ণ। দরজা, জানালা ভাঙা, নিচতলা স্যাঁতসেঁতে আর মশার উপদ্রব। আমাদের দাবি দ্রুত নজরুল হল সংস্কারসহ আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমীর আলী চৌধুরী জানান, ১৯৫৯-৬০ সালের দিকে ধর্মপুর এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করা হয়। একই বছর কবি নজরুল হল ও কলা ভবন নিমার্ণ করা হয়। ৬২-৬৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাংলা আর অর্থনীতি বিভাগ দিয়ে অনার্সের শ্রেণি কার্যক্রম চালু হয়েছে। আমি তখন বাংলার প্রভাষক হিসাবে এ কলেজে যোগদান করেছি। ১৯৯২ সালে ড. মো. আবদুল কাদেরের সময়ে ছাত্রদের রাজনৈতিক দন্দ্বের কারণে ছাত্রাবাসটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর ১৯৯৪ সালে আমি অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণের পর কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে চালু করেছি।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া জানান, কবি নজরুল হলের ভবনটি বেশ পুরনো। কয়েকবার পুন:মেরামত করা হয়েছে। সদর আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযুদ্ধা হাজী বাহাউদ্দিন বাহার মহোদয়ের সহযোগিতায় ইতোমধ্যে কলেজের নানা সমস্যা সংকটের কথা আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। আশা করি নতুন প্রকল্পে এ হলটি ভেঙে বহুবল ছাত্রাবাস তৈরি করা হবে। যার মধ্যে এক হাজার ছাত্র আবাসিক সুবিধা পাবে।