জাতীয় গ্রিডে মিলবে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

 তিতাসের ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার শুরু
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
শুধু তিতাস গ্যাসেরই নয়, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড’র (বিজিএফসিএল) আওতাধীন সাতটি গ্যাস কূপ বন্ধ দীর্ঘদিন ধরেই। তন্মধ্যে তিতাস’র চারটি। গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে বিজিএফসিএল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস’র ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজ শুরু করেছে। এর ফলে দুই মাসের মধ্যে জাতীয় গ্রীডে দৈনিক ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে বিজিএফসিএল’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রেকৌশলী ফজলুল হক এই ওয়ার্কওভার কাজের উদ্বোধন করেন। পর্যায়ক্রমে হবিগঞ্জ, মেঘনা এবং বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডের বন্ধ থাকা সাতটি কূপেরও ওয়ার্কওভার করার বিষয় নিশ্চিত করেছেন বিজিএফসিএল কর্তৃপক্ষ।
গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে তিতাস, হবিগঞ্জ, মেঘনা এবং বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডের বন্ধ থাকা সাতটি গ্যাস কূপ ওয়ার্কওভারে বিজিএফসিএল ৫২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তন্মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপ থেকে পুনরায় গ্যাস উত্তোলনের জন্য ওয়ার্কওভার কাজ শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী দুই মাসের মধ্যেই উৎপাদন বন্ধ থাকা তিতাস’র ১৪ নম্বর কূপ থেকে পুনরায় গ্যাস উৎপাদন শুরু হবে। আর এতে করে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে পুরনো গ্যাস ক্ষেত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস। এই তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ২৩টি কূপ থেকে প্রতিদিন ৩৯২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। তবে নানা কারণে বন্ধ রয়েছে চারটি কূপ। এর মধ্যে বিগত ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে খননকৃত ২৯.৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ১৪ নম্বর কূপটি থেকে গ্যাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় পানি ওঠতে থাকে। এর ফলে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ০১ নভেম্বর থেকে কর্তৃপক্ষ এই কূপটি থেকে গ্যাস উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। শুধু তিতাসই নয়, বিজিএফসিএলের অন্য গ্যাস ফিল্ডগুলোরও বেশ কয়েকটি গ্যাস কূপ দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে। তাই গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা গ্যাস ফিল্ডের বন্ধ থাকা সাতটি গ্যাস কূপ ওয়ার্কওভারে ৫২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিজিএফসিএল।
প্রকল্প পরিচালক ইসমাইল মোল্লা জানান, বন্ধ থাকা সাতটি কূপের মধ্যে চারটি কূপের ওয়ার্কওভার কাজ সম্পন্ন করবে বাপেক্স। আর দ্রুত গ্যাস উত্তোলনের স্বার্থে বাকি কূপগুলোর ওয়ার্কওভার কাজ বিদেশী প্রতিষ্ঠান করবে। তিতাস’র ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজ শেষে করে পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোরও কাজ শুরু হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী দুই মাসের মধ্যেই তিতাস’র বন্ধ থাকা ১৪ নম্বর কূপ থেকে দৈনিক অন্তত ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে।
বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল হক জানান, বিগত প্রায় ৫৫ বছরে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের কূপগুলো থেকে প্রায় সাড়ে ৫ টিএসএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। তবে কূপগুলোতে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় উৎপাদনও তুলনামূলক কমছে। ফলে গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক রাখতে কয়েকটি কূপে ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বন্ধ থাকা কূপগুলোর ওয়ার্কওভার কাজ শেষ হলে বিজিএফসিএলের গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে গ্যাসের উৎপাদন আরও বাড়বে।
ওয়ার্কওভার কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিজিএফসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান, মহাব্যবস্থাপক (প্রকল্প ও উন্নয়ন) জাকির হোসেন তরফদার, মহাব্যস্থাপক (অপারেশন) আশরাফুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।