প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৬:৩২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ৭, ২০২৩, ৮:০১ অপরাহ্ণ
তালাক দেয়ার ক্ষোভে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
স্বামীর মারধর-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে স্বামীগৃহ ছাড়েন এক সন্তানের জননী সোমা আক্তার। এক পর্যায়ে ডিভোর্স লেটার দিয়েও পায়নি রেহাই। শেষতক পিত্রালয়ে গিয়ে সাবেক স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন রাসেল মিয়া। এই ঘটনার দায়ে রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার (০৭ আগস্ট) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এই আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত রাসেল মিয়া (৪৩) জেলার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।
আদালতে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদন ও নথিপত্র সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে জেলার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রাসেল মিয়ার সাথে একই ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছোট মেয়ে সোমা আক্তারের (২৫) বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বরপক্ষকে যৌতুক হিসেবে একটি অটোরিকশাসহ প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকার মালামাল ও এক ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার দেওয়া হয়। রাসেল-সোমার দাম্পত্য জীবনে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান। কিন্তু রাসেল বিভিন্ন সময় সোমাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে চাপ দিয়ে যাচ্ছিলো। এসব নিয়ে তাদের দু'জনের মধ্যে দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকার এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে সোমা আক্তার পিত্রালয়ে চলে যায়। এক পর্যায়ে বিগত ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের সালের ৩১ মে সোমা তার স্বামী রাসেলকে তালাক দেন। এরপর থেকেই ক্ষুব্ধ ছিল রাসেল। সেই বছরেরই ৪ অক্টোবর সন্ধ্যের পর নিজ বাবার বাড়িতে খাওয়া শেষে একঘর থেকে আরেক ঘরে যাওয়ার সময় রাসেল এলোপাথারি কুপিয়ে সোমাকে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোমাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তবে মারা যাওয়ার আগে সোমা হামলাকারী হিসেবে রাসেলের নাম বলে যায়। এই ঘটনার পরদিন সোমার বাবা কুদ্দুস মিয়া বাদী হয়ে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) বেলাল হোসেন দুই মাসের মাথায় রাসেল মিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমা তালাক দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাসেল তাকে হত্যা করেন। সকল সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সোমবার (৭ আগস্ট) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার রাসেল মিয়াকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করেন। তবে হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই ঘাতক রাসেল পলাতক থাকায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছাড়া আসামি পক্ষের নিয়োজিত কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজি দিদারুল আলম বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণে রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি তাকে আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।'
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com