দাফনের প্রস্তুতির সময় কেঁদে উঠে নবজাতক!

 

প্রতিনিধি।
কুমিল্লার চান্দিনায় সিজারিয়ান অপারেশনে সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। মৃত ঘোষিত ওই নবজাতকে ওষুধের কার্টুনেবন্দি করে বাড়িতে নিয়ে যায় স্বজনরা।
মৃত ওই নবজাতককে দাফনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় হঠাৎ কেঁদে উঠায় আত্মীয়-স্বজনরা ওই নবজাতককে নিয়ে হাসপাতালে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সোমবার চান্দিনা উপজেলা সদরের পল্লী বিদ্যুৎ রোড এলাকার ‘চান্দিনা সেন্ট্রাল হাসপাতালে’ ওই নবজাতকের জন্ম হয়। নবজাতকের মাতৃ গর্ভেই মৃত্যু হয় এমন সিদ্ধান্তে হাসপাতালের কর্তব্যরত সেবিকারা ওষুধের কাটুনে বন্দি করে দেয় সদ্যজাত শিশুটিকে। মৃত ওই নবজাতককে বাড়িতে নিয়ে কাটুন খুলে মাটিতে রাখার পর নড়েচড়ে উঠে ওই নবজাতক। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই নবজাতক প্র¯্রাব ও মলত্যাগ করে চিৎকার করে উঠলে বাড়ির লোকজন তাকে কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আবারও মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, বুড়িচং উপজেলার আবিদপুর গ্রামের প্রবাসী জালালের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার(১৯)। সোমবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ৬টায় সুমাইয়াকে চান্দিনা সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিলে সকাল সাড়ে ৮টায় সিজারিয়ান অপারেশনে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। ওই সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
প্রসূতি সুমাইয়ার বড় বোন জরিনা আক্তার জানান, আমার বোনকে হাসপাতালে আনার পর পরীক্ষা করে তারা বলছে দ্রুত সিজার করতে হবে। অপারেশনের পর ডাক্তার বাচ্চাটিকে কয়েকটি ঝাকি দিয়ে বলেন, বাচ্চা মারা গেছে। পরবর্তীতে হাসপাতালের স্টাফরা একটি ওষুধের কাটুনে বেঁধে দেয় শিশুটিকে।
শিশুটি জন্মের পর কাটা নাভিতে পর্যন্ত বাঁধ দেয়নি কেউ। সম্পূর্ণ অবহেলা ও অনভিজ্ঞতার কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
সুমাইয়ার পিতা আব্দুল বারেক জানান, নাতির মৃত্যুর কথা শুনে আমি জানাজা দিতে আবিদপুর যাই। সকাল অনুমান ১১টার দিকে হঠাৎ ওই শিশুটির নড়েচড়ে উঠে। এ অবস্থা দেখে আমরা কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পর আবারও শিশুটি চিৎকার করে উঠে। মল ও মূত্র ত্যাগ করায় আমরা কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার আবারও মৃত ঘোষণা করেন।
সিজারিয়ান ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, ‘মূলত নবজাতক জন্মের এক মিনিটের মধ্যে নড়াচড়া বা চিৎকার না করলে ডাক্তারী ভাষায় তাকে মৃত বলা হয়। ওই শিশুটির ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। পরবর্তীতে কিছু ঘটে থাকলে তা চিকিৎসাবিদ্যা সমর্থন করে না’।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাপস শীল জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।