দুশ্চিন্তায় কুমিল্লার স্বল্প আয়ের মানুষ

 

হাসিবুল ইসলাম সজিব ।।
বৈষম্য সংস্কার আন্দোলনের পর সরকারের দেওয়া কারফিউতে কুমিল্লার স্বল্প আয়ের মানুষের জীবন-যাপন কষ্টকর হয়ে পড়েছে। রিকশা চালক হতে শুরু করে হোটেল শ্রমিক,সবজি বিক্রেতা,সিএনজি অটো রিকশা চালক,দিন মজুরসহ রাস্তার পাশে বসা অস্থায়ী দোকানিদের জীবন-যাপনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
রিকশা চালক রুমান মিয়া মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং কারফিউর আগে আমার প্রতিদিনের আয় ১৭০০-১৮০০ টাকা। মালিক জমা ৫০০ টাকা এবং সারাদিনের খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে হাজার খানেক টাকা নিয়ে বাসায় ফিরে যেতাম। কারফিউতে লোকজন কম থাকায় আজ সারাদিনে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ইনকাম হয়েছে ৪০০ টাকা। নিজের খাওয়া খরচ এবং পরিবারের খোরাকের ব্যবস্থার তো দূরের কথা মালিক জমা এখনো ১০০ টাকা বাকি।
হোটেল শ্রমিক শাহাবুদ্দিন জানান, পরিবার নিয়ে কুমিল্লা শহরে আজ কয়েক বছর থাকেন। কাজ করেন ছোট একটি হোটেলে। মজুরি দৈনিক ৭০০ টাকা। তা দিয়ে চলে বাসা ভাড়া ৫হাজার টাকা,সন্তানের লেখাপড়ার খরচ ৭ হাজার টাকাসহ পরিবারের সকল খরচ। অসুস্থতার কারণে এ মাসে চার দিন কাজ করতে পারেননি। কারফিউতে দোকান বন্ধ তিন দিন। মাস শেষে কিভাবে যে সংসার খরচ চলবে তা নিয়ে তিনি চিন্তিত।
সবজি বিক্রেতা ফারুক হোসেন জানান, কারফিউর আগে দৈনিক ১৩-১৫ হাজার টাকার সবজি আনলে তা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব বিক্রি হয়ে যেতো। কারফিউর তিনদিনে ১৩-১৫ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করে আজ নতুন মাল আনলাম। মানুষজন কম। আমরা মূলত ইপিজেডকে কেন্দ্র করে দোকান দিয়েছি । কারফিউতে ইপিজেড বন্ধ, আমাদের ব্যবসাও বন্ধ। মালামাল শুকনা হলে কয়েকদিন রাখা যেতো কিন্তু আমাদরে এগুলো কাচাঁ মাল দুই-তিনদিনের বেশি রাখা যায় না, পঁচে যায়।
ফার্নিচার মিস্ত্রি মামুন জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং কারফিউর জন্য কোন কাজ কাম নাই তার। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। বিদ্যুতের টাকা রিচার্জ করতে না পারায় দুইদিন ধরে থাকছেন অন্ধকারে। আত্মীয়দের নিকট থেকে টাকা ধার করে পরিবার চালাচ্ছেন তিনি। দেশের পরিস্থিতি কখন ভালো হবে তা নিয়ে মনে নানান সংশয়।