দেবিদ্বারে মাচায় ঝুলছে থোকায় থোকায় আঙুর
মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লায় বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ বাড়ছে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বলরামপুরের পর এবার আরো বড় আকারের চাষ হচ্ছে দেবিদ্বার উপজেলায়। দেবিদ্বার উপজেলার দলাহাস গ্রামের মাঠে থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ আঙুর। দুই বিঘা জমিতে আঙুরের চাষ করা হয়েছে। আঙুরের বাগান দেখতে স্থানীয়রা ভিড় জমাচ্ছেন।
স্থানীয় ও কৃষি অফিসের সূত্র জানায়,দেবিদ্বার উপজেলার মরিচা গ্রামের উদ্যোমী কৃষক মো.আনোয়ার হোসেন সরকার। তিনি সৌদি আরবে কাজ করতেন। দেশে এসে বিভিন্ন ব্যতিক্রম ফসলের চাষ করেন। এবার পাশের গ্রাম দলাহাসে করেছেন আঙুরের চাষ। ঝিনাইদহ থেকে চারা এনেছেন। ১৫মাস আগে দুই বিঘা উঁচু জমিতে আঙুর চাষ করেন।
বাগানে গিয়ে দেখা যায়,দলাহাস গ্রামের সড়কের পাশে উঁচু জমি। সেখানে বাঁশ ও সিমেন্টের পিলার দিয়ে মাচা করা হয়েছে। মাচায় লতানো আঙুর গাছ। হালকা বাতাসে ঝুলছে থোকায় থোকায় সবুজ আঙুর। গাছের পরিচর্যা করছেন আনোয়ার হোসেন ও তার শ্রমিকরা।
আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, ৬ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। তার চাষ দেখে অনেকে প্রথমে হাসাহাসি করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন বিদেশে কিছু টাকা রোজগার করে এনেছেন। এখন তা জলে ফেলছেন। ঠাট্টা করা লোকজন ফলন দেখে বিস্মিতি। তারাও এখন আঙুর চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন। প্রথমবারেই বাগানে ভালো ফলন এসেছে। আশা করছেন সামনের বছর এই ফলন আরো বাড়বে। একই গাছ থেকে ২০-২৫ বছর ফল আসবে বলেও তিনি জানান। তিনি আরো তিন বিঘা জমিতে আগামীতে আঙুর চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় বলেন, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ৬০ শতাংশ জমিতে আঙুর বাগান করেছেন কৃষক আনোয়ার হোসেন। আমরা বাগানটি পরিদর্শন করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। পরিপক্ক হতে আরো ১৫-২০ দিন লাগবে। ফলন বা বাণিজ্যিক সফলতা ব্যর্থতা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা পরামর্শ দিয়ে তাদের সহযোগিতা করছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক(উদ্ভিদ সংরক্ষণ) শেখ আজিজুর রহমান বলেন, আঙুর মূলত ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চল,দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় ভালো হয়। এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে আঙুর বিচ্ছিন্নভাবে চাষ হচ্ছে। তবে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বলরামপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও দেবিদ্বার উপজেলার আনোয়ার হোসেন সরকার বাণিজ্যিক আকারে চাষ করছেন। ফলন পাওয়ার পর আমরা বুঝতে পারবো তারা কেমন সফল হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন,আঙুরের স্বাদ ও মিষ্টির পরিমাণ বাড়াতে আমাদের দেশের গবেষকরা নিশ্চয় আরো কাজ করবেন।