দেবিদ্বারে মাদরাসা সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

 দেবিদ্বার উপজেলায় ওয়াহেদপুর ইসলামিয়া আলীম মাদ্রাসার সভাপতি কাজী শাহ আলমের বিরুদ্ধে গভর্নিং বডির নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাত এবং অবৈধভাবে সরকারি খাল দখলের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে তার বিরুদ্ধে।
 এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার অভিভাকবৃন্দ এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য গভর্নিং বডির নির্বাচন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।  লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওয়াহেদপুর ইসলামিয়া আলীম মাদ্রাসার গভনিং বডির মেয়াদ পূর্তি ও নির্দিষ্ট সময়ে যথাযথ নিয়ম মোতাবেক নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা না করে দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্বে থেকে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধভাবে সরকারী জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ, গভর্নিং বডি নির্বাচনের ভোটার তালিকায় জালিয়াতি সহ নানান দুর্নীতি সাথে সম্পৃক্ত আছেন উক্ত মাদ্রাসার সভাপতি কাজী শাহ্ আলম। এলাকাবাসী জানান, মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউপি মেম্বার কাজী শাহ্ আলম মাদ্রাসায় বিগত সময়ে মোট ৭০জন দাতা সদস্য নির্বাচিত করেছেন। তাদের কাছ থেকে হাতিয়েও নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
 মাদ্রাসায় আসন্ন গভর্নিং বডি নির্বাচনের মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং সভাপতির স্বাক্ষরিত ভোটার হালনাগাদ তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভোটার তালিকার বিভিন্নস্তরে একই ব্যক্তিকে একাধিকবার ভোটার এবং প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক নয় এমন ব্যক্তিকেও একাধিক ভোটার দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ২০, ৪৮ ও ১৪৯নং ভোটার রাশেদ কাজী (শিক্ষার্থী- কাজী মিরাজুর রহমান) কে দেখা যায় ১ম শ্রেণিতে ২বার এবং ২য় শ্রেণিতে ১বার, ২২ ও ৮৪নং ভোটার কাজী টুটুল মিয়া (শিক্ষার্থী- মোসাঃ সাবিকুননাহার) কে ১ম শ্রেণিতে ২বার, ৪৪, ১৭৩, ১৯৭নং ভোটার কাজী মোঃ ফারুক (শিক্ষার্থী- কাজী জিহাদ) কে ১ম ও ৩য় শ্রেণিতে ৩বার সহ অন্যান্য আরও অভিভাবকে একাধিক বার তালিকাভূক্ত করা হয়েছে।
এব্যাপারে মাদ্রাসার সভাপতি কাজী শাহ্ আলমের সাথে মুঠোফেনে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমার কাছে দেওয়া হয় স্বাক্ষর করার জন্য। আমি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সে কাগজে স্বাক্ষর করে দেই। এখানে কোনো অনিয়ম হলে তার বিষয়ে আমি অবগত নই। মাদরাসার অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি সহ মাদ্রাসার সভাপতি দুজনেই ঐ তালিকায় স্বাক্ষর করেছি ঠিকই, তবে তা সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করিনি। সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করাটা আমার একটা বড় ভুল ছিলো।
 দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক-উন-নবী তালুকদার মুঠোফোনে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি অভিযোগ পাওয়ার পর তা ভালোভাবে দেখেছি। সেখানে অভিযুক্ত বিষয়গুলো প্রাথমিক ভাবে সত্য মনে হওয়ায় গভনিং বডি নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন হবে কি হবে না তা ঘোষণা করা হবে।