দৌলতগঞ্জ বাইপাস ও বাগমারায় যানজটের ভোগান্তি 

 

 

 

অফিস রিপোার্টার।।

দীর্ঘদিন ধরে বেহাল কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক। বর্ষার বৃষ্টিতে সড়কের গর্তে আটকে যায় যানবাহন। এখন গ্রীষ্মে ধুলায় ধূসর চারপাশ। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুরসহ অন্যান্য জেলার যাত্রীরা। প্রায় চার বছর ধরে ফোরলেনের কাজ চললেও এখনও ৪০ভাগ কাজ বাকী। বাকী রয়েছে কুমিল্লার লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাস এলাকা ও লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার এলাকার ফোরলেনের কাজ। এখানে প্রতিনিয়ত যানজটে আটকা পড়ছে মানুষ। এই এলাকায় কবে বাইপাস হবে তারও ঠিক নেই। পরিবহন সংশ্লিষ্ট লোকজন ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেয়া হোক।

যাত্রী ও পরিবহন চালকদের সূত্র জানায়, প্রায় চার বছর ধরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ফোরলেনের কাজ চলছে। ভাঙা সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে সময় নষ্ট, যানজট আর গাড়ি বিকল হওয়ায় ক্ষুব্ধ পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকরা। ভোগান্তিতে বিরক্ত যাত্রীরা। বেশি খারাপ অবস্থা বাগমারা দক্ষিণ বাজার,বাগমারা স্কুল সংলগ্ন সৈয়দপুর রাস্তার মাথা, লাকসাম নশরতপুর বাইপাস, হাউজিং বাইপাস এলাকায়। এ ছাড়া বিজয়পুর,ফয়েজগঞ্জ, হরিশ্চর অংশে ভাঙা রয়েছে। এদিকে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ফোরলেন প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ লাকসামের দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাস ও লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার। এখানেই বেশি যানজটের সৃষ্টি হয়। দুই ঘন্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে পাঁচ ঘন্টা। সড়কের দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে অনেকে রেলপথে চলাচল করছেন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লার সূত্র জানায়, কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার ফোরলেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোসহ সারা দেশের মানুষ উপকৃত হবেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া কাজ ২০২০ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। এদিকে যে গতিতে কাজ চলতে এতে আগামী বছরও কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সাইফ উদ্দিন আহমেদ পাপ্পু বলেন, লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাস ও বাগমারা বাজারে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরাসহ পরিবহন মালিক,যাত্রী সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এসব স্থানে দ্রুত কাজ শেষ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি এখানে ট্রাফিক পুলিশিং ব্যবস্থা জোরালো করা উচিত।

উপকূল বাস সার্ভিসের পরিচালক অধ্যাপক কবির আহমেদ জানান,সড়কটি খারাপ হওয়ায় ও যানজটের কারণে যাত্রীরা ফেনী হয়ে নোয়াখালী ও লক্ষীপুর যাচ্ছে। এতে যাত্রী কমে গেছে। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ এই সড়কে যাতায়াত করতে চান না।  সড়ক ভাঙা হওয়ায় ঘন ঘন গাড়ি বিকল হচ্ছে। সেদিন পানির দামে চারটি বাস বিক্রি করেছি। দ্রুত সড়কটি মেরামত করা না হলে গাড়ি চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।

কুমিল্লা মোটর এসোসিয়েশনের (বাস মালিক সমিতি) সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন,বাগমারা এলাকায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও লাকসামে মাননীয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর বাড়ি। তাদের সুদৃষ্টি পড়লে দ্রুত কাজ শেষ হবে। এতে চালক,যাত্রী সবার দুর্ভোগ কমবে। কাজ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজা-ই- রাব্বি বলেন,বাগমারায় ১.৮কিলোমিটার বাইপাস করা হবে। আশা করছি আমরা দ্রুত জমি অধিগ্রহণে যেতে পারবো। লাকসামে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বাইপাস করতে হবে। সেটি ফয়েজগঞ্জ থেকে ভাটিয়াভিটায় গিয়ে মিলিত হবে। এর মধ্যে রেল লাইন ক্রস করতে হবে। রেল লাইনের উপর রেল ওভার পাস করার পরিকল্পনা রয়েছে। লাকসামের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কিছু সময় লাগতে পারে।