ধান বিক্রির টাকা প্রদানে সোনালী ব্যাংকের কৃষক হয়রানি

সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম।।
‘সুবর্ণ জয়ন্তীর অঙ্গীকার সোনালী ব্যাংক হবে সবার’ সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রতিপাদ্য হলেও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা শাখা কৃষকের নয়। উপজেলা খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করে ভাউচার নিয়ে আসা কৃষকদের হয়রানিতে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্থাপন করেছে দৃষ্টান্ত। বলা হয় ‘কৃষকরা দেশের চালিকা শক্তি।’ অথচ টাকা উত্তোলনে যাওয়া সেই কৃষকদেরকে অবহেলা করে বসিয়ে রাখা হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা শাখা সেকেন্ড অফিসার সাহাব উদ্দিন পরে আসা গ্রাহকদের বিল ভাউচার ইস্যু করলেও কৃষকদের বিল ভাউচার করতে ইচ্ছুক নন। তিনি মেতে আছেন দুই ব্যক্তির সাথে খোশগল্পে। ফাঁকে নতুন কেউ কোনো কাজ নিয়ে এলে সেটাও করছেন। তবে কৃষকদের ফাইল পড়ে রয়েছে তার টেবিলের উপর।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ধান বিক্রি করে ভাউচার নিয়ে উপজেলা খাদ্য গুদাম অফিসের অফিস সহায়ক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিনের টেবিলে গেলে তিনি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট না থাকলে চেক ইস্যু করার অস্বীকৃতি জানিয়ে শাখা ম্যানেজারের নিকট পাঠান। শাখা ম্যানেজার আমীর সোহেল মোহাম্মদ আলী আহসানের নিকট খাদ্য গুদাম অফিসের অফিস সহায়ক অনুনয় করলে ম্যানেজার সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করতে বলে চেক ফরোয়াডিং স্মারকে স্বাক্ষর ( স্মারক নং ২২৬. ১৫-০৫-২৫) করেন।
এরপর সেই ফাইল সেকেন্ড অফিসার সাহাব উদ্দিনের টেবিলে নিলে তিনি সেটি ধরেও দেখেননি। অন্য কাজ আছে বলে রেখে দেন। এভাবে ৩:১৫ মিনিট থেকে ৪:৪৫ মিনিট পর্যন্ত ফেলে রাখেন। অবশেষে ৫:২০ মিনিটে কৃষকদের চেক ইস্যু করা হয়।
ভোগান্তির শিকার কৃষকদের মধ্যে নেতড়া গ্রামের আবুল বশর চৌধুরী, বাতিসার সোনাপুর গ্রামের বেলাল হোসেন, পৌরসভার পাঁচরা গ্রামের দুলাল মিয়া, সোনাকাটিয়ার জান্নাত আরা পাখি, চান্দিশকরার মরিয়ম, চাঁন্দকরার জুলিয়া বলেন, ১৭ জন কৃষক দুপুরে খাদ্য গুদাম থেকে কাগজ সংগ্রহ করে ব্যাংকে এসে বসে আছেন। দুপুরের খাবার খাওয়া হয়নি কারো। মহিলারা কেউ কেউ বাড়িতে ছোট বাচ্চা রেখে এসেছেন। সোয়া তিনটা থেকে এখানে বসে আছেন, কিন্তু অফিসার কৃষকদের ফাইলে হাত দিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য গুদাম এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, ‘সরকার ঘোষিত খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কৃষকের যে কোনো ব্যাংকে একাউন্ট থাকলেই চলবে। সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সেই একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন কৃষক।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে শনিবার দুপুরে ওই শাখার সেকেন্ড অফিসার সাহাব উদ্দিন কৃষকককে হয়রানি করা হয়নি দাবি করে বলেন, ‘সব কৃষকের টাকার চেক ইস্যু করা হয়েছে। তবে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট থাকলে টাকা তুলতে সহজ ও সময় কম লাগে।’
সোনালী ব্যাংক চৌদ্দগ্রাম শাখার ম্যানেজার আমীর সোহেল মোহাম্মদ আলী আহসান বলেন, ‘বৃহস্পতিবারে ব্যাংকে কাজের চাপ বেশি থাকে। কৃষকদের সময়মতো সেবা দেয়া হয়েছে। তাদের ধান বিক্রির বিল বাবদ সব চেক ইস্যু করা হয়েছে। কোন প্রকার হয়রানি করা হয়নি।’