কুমিল্লা নগরীতে বাড়ছে বেসরকারি কলেজ। ভাড়া বাসা বাড়ি থেকে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে এসব প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার মান আর অর্থের ব্যবস্থাপনা নিয়ে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এনিয়ে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লার কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, এটি একটি পরিসংখ্যানের বিষয়। গত দশ বছরে কুমিল্লা শহরে অনেক কলেজ হয়েছে ঠিক। তবে জনসংখ্যা সে অনুপাতে বাড়ছে। ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে ২৪/২৫ শত শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করে। সে হিসাবে কুমিল্লার বেসরকারি কলেজগুলোর ক্যাপাসিটি নেই। আবার গুণগত মান যে, খুব ভালো। সেটাও বলা যাচ্ছে না।
কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজ অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন লিটন বলেন, আমাদের কলেজের যাত্রা দেড় বছর হল। আমাদের দুইটা ব্যাচ বের হলে ফলাফলের বিষয়টা দেখা যাবে। যে সব শিক্ষার্থীরা সরকারি কলেজে চান্স পায় না। এ রকম বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি হয় বেসরকারি কলেজে। তাদেরকে আমরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত নিশ্চিত করে, টিউটোরিয়াল, সেমিস্টার পরীক্ষা নিয়ে সর্বোপরি পরিকল্পিত পাঠদানের মাধ্যমে ভাল ফলাফল ও ভাল মানুষ হওয়ার প্রেরণা দেই। আমি ইতোপূর্বে কয়েকটি বেসরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠার সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। সে সব কলেজের বহু ছাত্র-ছাত্রী মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে।
মাফিয়া বেগম নামের একজন অভিভাবক বলেন, মেয়ে রূপসী বাংলা কলেজ থেকে পাশ করেছে। কলেজে ভর্তির সময় কোন ফি কতো সেটা বলে না। ভর্তির পর বলে লগোসহ শীতের জামা কিনতে হবে। কলেজের ম্যাগাজিনে টাকা দিতে হবে। ভ্রমণে যেতে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। রশিদে মিলাদের টাকা দেওয়ার পর আবার বিনা রশিদে টাকা দিতে হবে। সর্বশেষ যখন সার্টিফিকেট আনতে গেছি, তখনও বলে আড়াই হাজার টাকা দিতে হবে, নয়তো সনদ দিবে না।
কুমিল্লা কমার্স কলেজ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর মাসউদ বলেন, ধরুন কুমিল্লার সেরা ৫টি সরকারি কলেজে ১৫০০ জন বিজ্ঞান বিভাগের জিপিএ-৫ নিয়ে ভর্তি হলো। উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে জিপিএ-৫ পায় ৫শত জন। বাকী ১০০০ তথাকথিত গোল্ডেন মেধাবীরা কোথায়? এর মূল কারণ দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা, যা সরকারি কলেজে নেই বললেই চলে । অন্যদিকে মেধাবী খুঁজি না,তৈরি করি" এ শ্লোগানকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত, আমার মতো একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এসএসসিতে মাত্র ৩ অথবা ৪ পয়েন্ট নিয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা এইচএসসিতে জিপিএ ৫ সহ সবসময় ৯৫ থেকে ১০০ভাগ উত্তীর্ণ হচ্ছে। মূলতঃ সবলকে সবল বানানোর চেয়ে দুর্বলকে সবল বানানোই আমি চ্যালেঞ্জ মনে করি।
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার মন খুব ভালো হয়নি। আবার খারাপের দিকেও যায়নি। পরপর সরকার ভালো কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যদি তা যথাযথ বাস্তবায়ন হতো। তবে শিক্ষার সুফল সহজে পাওয়া যেতো।
আমরা জানি, কুমিল্লা শহরে অনেক কলেজ হয়েছে। প্রতি বছরই কলেজ বাড়ছে। কলেজের ব্যানার ফেস্টুনে খুঁটি ও দেয়াল ভরে উঠছে। সেগুলোর অধিকাংশের গুণগত মান তেমন ভালো নয়। শুধু প্রতিষ্ঠান নয় আমরা চাই মান সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। এবিষয়ে শিক্ষাবোর্ড আরো বেশি তদারকি করতে হবে।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com