মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা নগরীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে র্যাম্প(ভবনে উঠার সিঁড়ি) না থাকায় দুর্ভোগে পড়ছেন সেবা প্রত্যাশীরা। বিশেষ করে হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী শারিরীক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন। ভবনে র্যাম্প করার বিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন সচেতন মানুষ ও শারিরীক প্রতিবন্ধীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা নগরীতে চিকিৎসা বিষয়ক অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে র্যাম্প রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার নতুন ভবনে র্যাম্প রয়েছে। তবে রেস্তোরাঁ,বিপনী বিতানে র্যাম্প নেই বললে চলে। হাই স্কুল এবং কলেজেও র্যাম্পের ব্যবস্থা তেমন নেই।
কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম সোহেল। আলোকিত বজ্রপুর নামের সংগঠনের সংগঠক। এছাড়া তিনি সাবেক খেলোয়াড়। চাকরি করেছেন বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে। দুর্ঘটনার পর তিনি এখন হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী। তবে তার উদ্যোম থেমে যায়নি। তিনি তার সংগঠন,হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী ব্যক্তি ও সমাজের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেন। তিনি বাসায় ক্যাপসুল লিফট ও র্যাম্প করেছেন। প্রয়োজনে যখন তখন কাজে বের হয়ে যেতে পারেন। নজরুল ইনস্টিটিউট কুমিল্লা কেন্দ্রে কোন অনুষ্ঠান থাকলে তিনি আর অন্য ১০জনের মতো এসে উপভোগ করতে পারেন। কিন্তু যেখানে র্যাম্প নেই। সেখানে প্রবেশ করা তার জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেকের সাহায্য নিতে হয়।
রফিকুল ইসলাম সোহেল বলেন, দেশের ২ভাগেরও বেশি মানুষ শারিরীক প্রতিবন্ধী। তাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। কিন্তু র্যাম্প না থাকায় সেটি সম্ভব হয়ে উঠেনা। কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবন, নজরুল ইনস্টিটিউট কুমিল্লা কেন্দ্র,ফরিদা বিদ্যায়তন,আল আমিন বারবী রেস্তোরাঁসহ অল্প কিছু প্রতিষ্ঠানে র্যাম্প রয়েছে। ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে র্যাম্প করার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
তেলিকানার মো. ইমরান হোসেন ও ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র মইনুল হাসান বলেন, হুইল চেয়ার ব্যবহারকারীদের অনেকে বোঝা মনে করেন। কেউ মনে করেন তারা ঘর বন্দি থেকে ধুঁকে ধুঁকে শেষ হয়ে যাবো। কিন্তু তাদেরও জীবন এবং পরিবার রয়েছে। তারা সমাজের আরো ১০জনের মতো স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ চায়। তারা বিভিন্ন বিভিন্ন কাজের সাথে জড়িত হতে হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। নগরের প্রতিষ্ঠান গুলোতে সহজে যাতায়াতের জন্য র্যাম্প প্রয়োজন।
কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ¦ নূর উদ্দিন আহ্ম্মদ বলেন,আমরা হাসপাতালের সাথে প্রশাসনিক ভবনেও র্যাম্প তৈরি করেছি। যাতে সকল মানুষ তার সেবা সহজে নিতে পারেন।
জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জেড এম মিজানুর রহমান খান বলেন, র্যাম্প করতে খুব বেশি টাকা লাগে না। র্যাম্প না থাকায় শারিরীক প্রতিবন্ধীরা সেবা বঞ্চিত হন। এবিষয়ে প্রকৌশলীরা আন্তরিক হলে সেবা প্রতিষ্ঠান গুলোতে র্যাম্প তৈরি হতে পারে। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরও র্যাম্প তৈরির মানবিক উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা বিভিন্ন ফোরামে এবিষয়ে কথা বলছি।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com