আমজাদ হাফিজ, লাকসাম ॥
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার যাত্রা শুরু হয় ২০০২ সালে। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভাটির আয়তন ১৩ দশমিক ৪৫ বর্গকিলোমিটার। প্রতিষ্ঠার শুরুতে নাঙ্গলকোট পৌরসভায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা তেমন ছিল না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের পৌর এলাকাটি ছিল উন্নয়ন বঞ্চিত। এ পৌরসভায় গত ৫ বছর ধরে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন মোঃ আবদুল মালেক। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মজুমদারকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সার্বিক নির্দেশনায় নাঙ্গলকোট পৌরসভার উন্নয়ন কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। মন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় মেয়র আবদুল মালেকের হাত ধরেই ২০১৮ সালের এপ্রিলে পৌরসভাটি ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়।
পৌর নাগরিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার শুরুতে নাঙ্গলকোট পৌরসভায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা তেমন ছিল না। বর্তমান মেয়র পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তার হাত ধরেই পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। তিনি বিভিন্ন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার করেছেন। ড্রেন নির্মাণ করেছেন। পৌর এলাকার সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ফুলের গাছ লাগানোসহ সড়কবাতির ব্যবস্থা করেছেন। অর্থমন্ত্রীর সহযোগিতায় নাঙ্গলকোট পৌরসভায় কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পৌর এলাকায় এখন আর কোনো কাঁচা রাস্তা নেই। কুমিল্লার অন্যান্য পৌরসভার তুলনায় নাঙ্গলকোট পৌরসভা এখন ‘উন্নয়নের রোল মডেল’। নাঙ্গলকোট পৌরসভার উন্নয়ন-অগ্রগতি প্রসঙ্গে ষাটোর্ধ্ব ইলিয়াস মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক ও মফিজুর রহমানসহ কয়েকজন প্রবীণ বাসিন্দার সাথে কথা হলে তারা জানান, বর্তমান মেয়রের নেতৃত্বে নাঙ্গলকোট পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। নানামুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে এ পৌরসভার পূর্বেকার চিত্র পাল্টে গেছে। গত ৫ বছরে অসংখ্য রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তারা আবদুল মালেককে পুনরায় মেয়র হিসেবে দেখতে চান।
সম্প্রতি প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় নাঙ্গলকোট পৌরসভার মেয়র আবদুল মালেক বলেন বলেন, ‘আমি নির্বাচনের সময় যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা শতভাগ পূরণের চেষ্টা করেছি। রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ করেছি। প্রতিটি ওয়ার্ড ও বাজারের রাস্তা ঢালাই এবং প্রশস্ত করেছি। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুলের বাগান তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে শত শত সোলার লাইট স্থাপন করেছি। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করেছি। জলাবদ্ধতা নিরসন ও মশা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছি। পৌর এলাকায় প্রয়োজনীয় ডাস্টবিন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং ময়লা-আবর্জনা রাখার জন্য ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছি। নাগরিক সেবা পেতে পৌরবাসীকে কোনো রকম হয়রানির শিকার হতে হয় না। আমাদের অভিভাবক মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সার্বিক সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনায় পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।’
মেয়র বলেন, ‘উন্নয়নের পাশাপাশি আমি নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নাঙ্গলকোট পৌরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পেরেছি। বর্তমানে পৌর এলাকায় সরকারি খাসজমি কারো দখলে নেই। এছাড়াও সরকারি খাল ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে আমি নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’ অপরাধ দমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, মাদক, চাঁদাবাজি, যৌন হয়রানি বন্ধে আমি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সভা, সেমিনার করে জনগণকে সচেতন করছি। উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে আইনের আওতায় এনেছি।’
নাঙ্গলকোট পৗরসভা নিয়ে আগামী দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র আবদুল মালেক বলেন, ‘দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আমি অবহেলিত পৌরবাসীকে একটি আধুনিক মডেল পৌরসভা উপহার দিতে নিরন্তর চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস, আমি যে কাজ করেছি তাতে পৌরবাসী সন্তুষ্ট। আগামী দিনে পৌর এলাকার সীমানাবর্ধনের পরিকল্পনা আছে। ইনশাআল্লাহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নগুলো থেকে কিছু গ্রাম পৌরসভায় যুক্ত করার চেষ্টা করবো। চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমি আসন্ন পৌর নির্বাচনে পুনরায় মেয়র পদে লড়তে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমি আশা করি, নাঙ্গলকোট পৌরসভার উন্নয়নে আমার নিরলস প্রচেষ্টা বিবেচনা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আমার প্রিয় নেতা, মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মহোদয় আমাকে পুনরায় মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিলে পৌর নাগরিকরা আমাকে ভোট দিয়ে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত করবেন।’