উপজেলা রিপোর্টার,চৌদ্দগ্রাম।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সম্পত্তির লোভে এক নিঃসন্তান বৃদ্ধ দম্পতির ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সন্তানরা। অবরুদ্ধ করে নিয়ে যায় ঘরে রাখা ৩ লাখ টাকা। করা হয় শারীরিক হেনস্থা ও মানসিক নির্যাতন। ঘটনাটি ঘটে বরিশাল অমৃত লাল কলেজের অধ্যাপক (অবঃ) মো: মমিনুল ইসলাম মজুমদার(৬৫) ও তাঁর স্ত্রী সেলিনা ইসলাম চৌধুরী নাজমা দম্পতির সাথে।
এ ঘটনায় তিন জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মমিনুল ইসলাম মজুমদার।
থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন তিনি। অর্থাভাবে পারছেন না ঠিকমতো চিকিৎসা নিতে। একপর্যায়ে পৈত্রিক ও খরিদা সূত্রে মালিকানাধীন নিজ বসতভিটা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলে তারই আপন ছোট ভাই নাছির উদ্দিন মজুমদার সম্পত্তিটুকু ক্রয়ের আশ্বাসে বায়না বাবদ বিভিন্ন সময় ২ লাখ টাকা প্রদান করেন। বাকি টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিস্ট্রি নেওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তারা আর কোনো টাকা দেয়নি। এরপর তারা অপরাগতা প্রকাশ করায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জরুরী চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে বসতভিটার ওই শেষ সম্বল জায়গাটুকু অন্যত্র বিক্রি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জমির বায়নাকারী নাছির উদ্দিন মজুমদারের স্ত্রী মোরশেদা বেগম, ছেলে নিজাম উদ্দিন, অপর ভাতিজা মৃত আব্দুল মতিন মজুমদারের ছেলে ইফতেখারুল ইসলাম মেশকাত তাদের অপরাপর সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে মমিনুল ইসলাম মজুমদারের বসতঘরে প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে হামলা করে। হামলাকারীরা গালমন্দ, শারীরিক হেনস্থা করাসহ ঘরে থাকা জমি বিক্রির নগদ ৩ লাখ টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এরপর বাড়ির মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ঘটনাটি ঘটে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানী মজুমদার বাড়িতে।
ভুক্তভোগী মমিনুল ইসলাম মজুমদার বলেন, আমার ভাই নাছির উদ্দিন জমি কিনবে বলে আমাকে দেড় বছর পূর্বে ২ লাখ দেয়। তারা আর কোনো টাকা দিতে না পারায় এবং জমিটি কিনতে অপরাগতা প্রকাশ করায় আমি চিকিৎসা ব্যায় মেটাতে অন্যত্র জায়গাটি বিক্রি করি। এ ঘটনার জেরে তারা আজ হামলা করার পর মূল ফটকে তালা দেয়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারী আমি সিসিইউ থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরি। অথচ সকাল থেকে আমি ঔষধ পর্যন্ত খেতে পারিনি। ঘটনার সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ একাধিকবার কল করেও কোনো সহযোগিতা পাইনি। পরে আত্মীয়দের সহযোগিতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ ঘটনায় মমিনুল ইসলামের ছোট ভাই নাছিরের স্ত্রী মোরশেদা বেগম বলেন, 'বায়না বাবদ আমার ভাসুরকে বিভিন্ন সময়ে ২ লাখ ২৬ হাজার টাকা দিয়েছি। টাকা ফেরত না দিয়ে জায়গা অন্যত্র বিক্রি করেছেন। এ নিয়ে বাক-বিতন্ডা হয়।'
মমিনুল ইসলামের ভাতিজা মেশকাত বলেন, 'আমি বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। বাড়িতে তালা দেয়ার ঘটনায় আমি জড়িত নই।'
এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com