আমোদ ডেস্ক।।
মহামারি করোনা ভাইরাসের জেরে নিজেদের দেশে ঢোকার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সিঙ্গাপুর সরকার। এদিকে সেই নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল হওয়ার ফলে ১ অক্টোবর থেকে সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করতে পারবেন বাংলাদেশিরা। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রবাসী শ্রমিক, চিকিৎসাপ্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে সিঙ্গাপুরে প্রবেশের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্তও জুড়ে দেয়া হয়েছে।
সিঙ্গাপুর সিভিল অ্যাভিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ফ্লাইটের টিকিট কেনার পূর্বশর্ত হিসেবে প্রবাসী শ্রমিকদের এজেন্সি বা স্পন্সরের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের (এমওএম) কাছ থেকে অনুমতিপত্র নিতে হবে। অনুমতিপত্র পেলেই কেবল তারা টিকিট কিনে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হতে পারবেন।
সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর তাদের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত সতর্কতা হিসেবে ১৪ দিনের জন্য একটি হোটেলে আইসোলেশনে থাকতে হবে। হোটেলে থাকার জন্য আনুমানিক ২২০০ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার খরচ করতে হবে প্রবাসীদের। আইসোলেশনের জন্য বাংলাদেশ থেকে হোটেল বুকিং করেই কেবল সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করতে পারবেন তারা।
এদিকে প্রবাসীরা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক লাখ ৩৬ হাজার টাকা আইসোলেশন খরচ ব্যয় করা তাদের কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
প্রবাসীদের অতিরিক্ত খরচের বিষয়ে সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. তৌহেদুল ইসলাম জানান, ‘সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করা প্রতিটি মানুষকেই কোয়ারেন্টাইন বা ইনস্টিটিউশনাল আইসোলেশনে থাকতে হয়। এমনকি একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের একজন মন্ত্রীকেও সিঙ্গাপুরে আইসোলেশনে থাকতে হয়েছে। সবাইকেই থাকতে হবে। আইসোলেশনের জন্য সিঙ্গাপুর কিছু প্রতিষ্ঠান বা হোটেলকে দায়িত্ব দিয়েছে। থাকা-খাওয়ার খরচ হিসেবে ওই প্রতিষ্ঠানই ২২০০ ডলার খরচ নেবে, এখানে সিঙ্গাপুর সরকার বা বাংলাদেশ সরকারের এখানে কিছুই করার নেই।’
তবে শুধু আইসোলেশন বা খরচের বিষয়ই শুধু নয়, সিঙ্গাপুরগামীদের ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার আগের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে ‘নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি সবাইকে সিঙ্গাপুর পৌঁছে আবারও নিজ খরচে কোভিড-১৯ টেস্ট করাতে হবে।
এদিকে শ্রমিক ছাড়া অন্যদের সিঙ্গাপুরে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটির সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, দেশটিতে আপাতত বাংলাদেশ থেকে কোনো পর্যটক বা দর্শনার্থী যেতে পারবেন না। তবে চিকিৎসাপ্রত্যাশীরা যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশি এজেন্টের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল সার্টিফিকেট বা অনুমতিপত্র লাগবে।
সিঙ্গাপুরে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ফেরার আগে বাংলাদেশ থেকেই সিঙ্গাপুরের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়া কারও জন্যই দেশটির চাঙ্গি এয়ারপোর্টে কোনো দর্শনার্থী আসতে পারবেন না।
সিঙ্গাপুরের সিভিল অ্যাভিয়েশনের পাশাপাশি প্রবাসীদের খরচ বাড়িয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও। বিমানের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, সিঙ্গাপুর যেতে প্রবাসীদের ওয়ানওয়ে (ঢাকা-সিঙ্গাপুর) টিকিটের মূল্য দিতে হবে ৪১ হাজার ১৯২ টাকা। টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে বিমানের চারটি ক্যাটাগরি থাকলেও সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে শুধু ‘ইকোনমি ফ্লেক্সিবল’ অর্থাৎ সর্বোচ্চ দামের ক্যাটাগরিতে সব টিকিট বিক্রি করছে তারা। করোনার আগে স্বাভাবিক সময়ে সিঙ্গাপুরের ওয়ানওয়ে টিকিটের মূল্য ছিল ২০ হাজার টাকার মতো।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com