প্রবাসে স্বামীর নিকট পাঠানো হয় এডিট অশ্লীল ছবি,স্ত্রীর বিষপানে আত্মহত্যা
আমোদ প্রতিনিধি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এডিট করে প্রবাসে স্বামীর নিকট অশ্লীল ছবি পাঠানোর পর লজ্জায় তানজিনা আক্তার রুমি(২৫) নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ সোমবার লাশ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। তানজিনা আক্তার উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের পেছামুড়ি গ্রামের সৌদি প্রবাসী আলাউদ্দিনের স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় তানজিনা আক্তার রুমি পরিবারের সদস্যদের আড়ালে বিষপান করে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে পথিমধ্যে মহাসড়কের দাউদকান্দি নামক স্থানে তানজিনার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন তাঁর শ্বশুর আবুল কালাম।
তানজিনার শ্বশুর আবুল কালাম জানান, তাঁর পুত্রবধূ তানজিনাকে একই এলাকার মনু মিয়ার ছেলে বখাটে আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ কু-প্রস্তাবসহ উত্যক্ত করে আসছিল। এ বিষয়ে এলাকায় একাধিক শালিশ দরবার হলেও বখাটে আনোয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে তার পুত্রবধূর ছবি তুলে অশ্লীল ছবিতে রুপান্তরিত করে ইমোর মাধ্যমে প্রবাসে থাকা তানজিনার স্বামী আলাউদ্দিনকে পাঠাতো। এছাড়াও আনোয়ার বিভিন্ন সময়ে এসব অশ্লীল ছবি তার সহপাঠীদেরকেও পাঠিয়ে পুত্রবধূকে আরও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। এ সকল অশ্লীল ছবিকে পুঁজি করে আনোয়ার বিভিন্ন সময় তার পুত্রবধূর নিকট মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতো। অন্যথায় তাকে বাঁচতে দিবে না বলে হুমকি দিতো। রোববার গভীর রাতে তানজিনা তার সাড়ে ৪ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে আলো আক্তারকে নিয়ে প্রকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বের হলে আনোয়ার তানজিনাকে মারধর করে। এ সময় আনোয়ার তানজিনার হাতে থাকা এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। এ অপমান সইতে না পেরে তানজিনা আক্তার সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের আড়ালে বিষপান করে।
তানজিনার ভাই রিয়াদ জানান, তার বোনকে বখাটে আনোয়ারসহ একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ খারাপ প্রস্তাবসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তানজিনা বিষপান করে। এতে তার মৃত্যু হয়।
রিয়াদ আরও জানান, তার বোন বখাটে আনোয়ার থেকে রেহাই পেতে বিভিন্ন সময়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারগুলো পরিবর্তন করলেও বখাটে আনোয়ার তানজিনার দুই জা সুমি ও প্রিয়ার সহায়তায় ইমো নম্বরগুলো সংগ্রহ করে পুনরায় তাকে উত্যক্ত করতো বলে মৃত্যুর আগে তার বোন তাদেরকে জানিয়ে যায়।
চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক অপারেশন এসএম আরিফুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে গৃহবধূ তানজিনা আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিবাদীগণের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।