প্রেমিককে ফিরে পেতে আশ্রয় দেয়া প্রতিবেশীর শিশু অপহরণ!

 

অফিস রিপোর্টার।।

প্রেমিককে ফিরে পেতে বরিশাল থেকে কুমিল্লার চান্দিনায় এসে ১০ মাসের এক শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সাবিনা নামের এক প্রেমিকা। ঘটনার এক দিন পর মাওয়া ফেরিঘাট থেকে অপহরণকারী সাবিনাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় চান্দিনা থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুর পিতা এরশাদুল হক। অপহরণকারী সাবিনা বরিশাল জেলার সদর উপজেলার দিবাকর গ্রামের মৃত খালেক বেপারীর মেয়ে। এ ঘটনায় সাবিনাকে বুধবার আদালতে পাঠানো হয়।

জানা যায়, বরিশালের সাবিনা ও ময়মনসিংহের ফারুক নামের এক যুবক গত ৭-৮ বছর আগে ময়মনসিংহ সদরের একটি হোটেলে কাজ করতো। সেখানে কাজ করার সুবাদে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ফারুক নামের ওই যুবক চান্দিনায় এসে দৈনিক মজুরিতে কৃষি শ্রমিকের কাজ করে। চান্দিনার মাইজখার গ্রামের কৃষিকাজ করার সুবাদে একই ইউনিয়নের আলিকামুড়া গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। ওই সংসারে তার দুইটি সন্তানও রয়েছে।
এদিকে সাবিনাও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তারপরও দুজনের মধ্যে বহাল থাকে প্রেমের সম্পর্ক। গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রেমিক ফারুকের সঙ্গে দেখা করতে আসেন সাবিনা। প্রেমিকের বাড়িতে ঠাঁই না হওয়ায় পার্শ্ববর্তী মাইজখার গ্রামে এসে একটি বাড়িতে রাত যাপনের জন্য আশ্রয় নেয় সাবিনা। ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে নির্মাণ শ্রমিক এরশাদুল হকের একমাত্র ছেলে সন্তান আবু সাঈদকে (১০ মাস) নিয়ে উধাও হয়ে যায় সাবিনা।

এরশাদুল হক জানান- সন্ধ্যার পর ওই মেয়ে একটি রাত থাকার জন্য অনুরোধ করলে আমার স্ত্রী মানবিক কারণে সরল বিশ্বাসে তাকে আশ্রয় দেয়। পর দিন আমি কাজে চলে যাই। বিকেলে আমার স্ত্রী আমার সন্তানকে উঠানে রেখে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে গেলে সাবিনা আমার সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায়। সন্ধ্যার পর ফোন করে অপহরণকারী সাবিনা জানান, তিনি আমার সন্তানকে নিয়ে গেছেন। তার স্বামীকে তার হাতে তুলে দিলে সে আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দেবে। কিছুক্ষণ পর তার ব্যবহৃত ফোনটিও বন্ধ পাই। উপায় না পেয়ে রাতে চান্দিনা থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি।

চান্দিনা থানার উপ-পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন ও নোমান হোসেন জানান- তাদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে রাতেই আমরা অভিযান শুরু করি। প্রযুক্তির মাধ্যমে ৭ সেপ্টেম্বর সারা দিন অভিযান চালিয়ে বিকেলে মাওয়া ফেরিঘাট এলাকা থেকে তাকে আটক করি।

চান্দিনা থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান জানান- সাবিনার তথ্যানুসারে তার প্রেমিক ফারুক। আর শিশু অপহরণ করে অন্য গ্রামের আশ্রয়দাতা ফারুকের। অপহৃত শিশুর বাবা এরশাদুল হকের মৌখিক অভিযোগে প্রেক্ষিতে রাতেই দুই অফিসারের নেতৃত্বাধীন টিম উদ্ধার অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার বিকেলে শিশুটিকে উদ্ধার করলেও থানায় হাজির হয় রাতে। আমরা শিশু আবু সাঈদকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। এ ঘটনায় অপহৃত শিশু আবু সাঈদের বাবার দায়ের করা মামলায় সাবিনাকে বুধবার বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়।