প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৪:৩৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ১২, ২০২৩, ৫:১৫ অপরাহ্ণ
প্রেমের ফাঁদে ফেলে যুবককে হত্যার অভিযোগ : তরুণী কারাগারে
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ফেসবুকে পরিচয়, মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক। কথিত এই প্রেমের ফাঁদে ফেলে ইয়াছিন আরাফাত আবিদকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগে কথিত প্রেমিকা তৃষা এখন শ্রীঘরে। নিহতের পিতার দায়েরকৃত মামলামূলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানা পুলিশ প্রেমিকা নাহিদা আক্তার তৃষাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহত ইয়াছিন আরাফাত আবিদ (২১) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পশ্চিমপাইকপাড়ার ট্যাঙ্কেরপাড় এলাকার হেলাল মিয়ার ছেলে। অন্যদিকে তার কথিত প্রেমিকা নাহিদা আক্তার তৃষা (১৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরা গ্রামের মোবারক খন্দকারের মেয়ে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আশুগঞ্জের সোনারামপুরের একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।নিহত আবিদের বাবা হেলাল মিয়া বাদী হয়ে নাহিদা আক্তার তৃষাসহ সাতজনকে আসামী করে আশুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে তৃষাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নিহত ইয়াছিন আরাফাত আদিবের সাথে নাহিদা আক্তার তৃষার ছিলো কথিত প্রেমের সম্পর্ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক'র মাধ্যমে আবিদকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তৃষা অন্যান্যদের নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে সুকৌশলে ডেকে নিয়ে আটক করে। এরপর ২০ লাখ টাকা এনে দিতে চাপ প্রয়োগ করে। তাদের প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় পরদিন দুপুরে আবিদকে হত্যা করা হয়। এরপর আশুগঞ্জের সোনারামপুরের লাভিডা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হত্যা ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়। এই নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তৃষাসহ তিনজনকে আটকে আশুগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেন। পরে নিহত আবিদের পিতা মামলা দায়ের করলে পুলিশ আটককৃত তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আতালতে সোপর্দ করেন।
নিহত আবিদের চাচা জাকির হোসেন জানান, মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি আবিদের মরদেহের পাশে একটি মেয়ে বসা । মেয়েটি জানায় সে আবিদের স্ত্রী! মৃত অবস্থায় আবিদের লাশ সে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। সে আরও জানায়, আবিদ ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মেয়েটির কথা অনুযায়ী আমরা যে বাসায় তারা ছিলো, সেখানে গিয়ে দেখি ফাঁসিতে ঝুলানোর মতো ঘরে কিছুই নেই; শুধু দুইটি জানালা ছিল। আমরা ধারণা করছি আবিদকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। মেয়েটি নিজেকে আবিদের স্ত্রী দাবি করলেও এখনো কোন কাবিননামা দেখাতে পারেনি। পুলিশ তাদের দেয়া এজাহার পরিবর্তন করেছে বলে অভিযোগ করেন জাকির হোসেন। তাছাড়া আসামীর বয়সও পরিবর্তন করা হয়েছে। তিনি অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান৷
আশুগঞ্জ থানার ওসি আজাদ রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাশের খবরে সেখানে গিয়ে ইয়াছিন আরাফাত আবিদ নামের এক তরুণের মরদেহ মেলে। লাশের সাথে থাকা তরুণী তৃষা পুলিশকে জানায়, আবিদের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। পরিবারের অজান্তে বিয়ে করে পরিচিতজনের বাসায় আশ্রয় নেয়ার পরদিন সকালে তৃষা টয়লেট থেকে এসে দেখে আবিদ আত্মহত্যা করেছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা করলে তৃষাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলায় জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী সব লিখা হয়েছে। আমরা ঘটনার রহস্য উদঘাটিত করতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ময়না তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছি।'
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com