বন্দী হয়ে আছি অনন্তকাল … নিগার সুলতানা
আমি হারিয়ে গিয়েছি আমার স্বপ্নরাজ্যে,
রৌদ্রস্নাত পাহাড়ি ঝর্ণার ধারে,
সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে,
পূর্ণিমার আলোয় গহীন অরণ্যে,
পাখির কাকলিমুখর কুঞ্জে,
পদ্মদীঘির কাক কালো জলে,
কোনো বিজন মাঠে বটের ছায়ায়,
কিংবা গাঁয়ের কোনো মেলায়।
নাহ্, বাস্তবে নয়।
সে কেবল মনে মনেই।
আমার আর হারানো হয় না
এই ক্লেদযুক্ত সমাজ-সংসার থেকে
আমি সত্যিই হারাতে চাই
কোনো এক নিভৃত অরণ্যে,
কল্পনার গহীন রাজ্যে।
এই নিষ্ঠুর জগৎ-সংসার থেকে অনেক অনেক দূরে
যেখানে পাখা মেলে দুঃখবতী মেয়েরা
মেঘের সাথে উড়ে উড়ে সূর্যের সাথে লুকোচুরি খেলে।
কিন্তু আমার আর হারানো হয় না।
হঠাৎ বুঝতে পারি
আমার হাতে পায়ে অদৃশ্য শেকল।
তথাকথিত সমাজের কুসংস্কারের শেকল।
“মেয়ে, তুমি এভাবে চলবে না,
মেয়ে, তুমি ওতো হাসবে না,
মেয়ে, তুমি জিন্স ফতুয়া পরবে না,
মেয়ে, তুমি বেশি সাজবে না। “
এই না, না আর না-এর শেকলে বন্দী আমি।
এখন আমি ঘৃণা করি
এই অদৃশ্য বন্দীত্বকে,
ঘৃণা করি এই নগ্ন, কুসংস্কারাচ্ছন্ন,
দয়া-মায়াহীন সমাজ-সংসারকে ।
আমি দেখলাম, আমি অনুভব করলাম
ডানাকাটা আমি পড়ে আছি
অদৃশ্য লোহার শক্ত খাঁচার ভিতরে
যেন বন্দী হয়ে আছি অনন্তকাল ধরে … ।