আমোদ প্রতিনিধি।।
বন্যা ও খরা কাটিয়ে কুমিল্লার গোমতী নদীর চরের জমিতে নতুন ধানের সোনালি হাসি ছড়িয়ে পড়েছে। আউশ মৌসুমে বিনাধান-১৯ ও বিনাধান-২১ জাতের ধান চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক। চলছে ধান কাটা ও মাড়াই উৎসব। পতিত জমিতে বাড়তি ফসল পেয়ে খুশি কৃষক। কুমিল্লার আদর্শ সদর, বুড়িচং,দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও দাউদকান্দির চরের শতাধিক বিঘা জমিতে এই ধান চাষ করা হয়।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) সূত্রমতে, কম সময়ে উৎপাদিত খরা সহিষ্ণু বিনাধান-১৯ ও বিনাধান-২১ জাতের ধান চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। এবার গোমতী নদীর চরসহ কুমিল্লার ১৭ উপজেলার আট শতাধিক বিঘা জমিতে এই ধানের চাষ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চাষ হয় বুড়িচং উপজলোর গোমতীর চরে। এদিকে উপজেলার এতবারপুর গ্রামের নদীর চরে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ধান ৫ দিন ডুবে ছিলো। আষাঢ় শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হয়নি। তবুও খরা বন্যা কাটিয়ে বিনাধান-১৯ ও বিনাধান-২১এর ভালো ফলন হয়েছে । বৃহস্পতিবার চরের ফসলের মাঠ পরিদর্শন করেন বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড.মোহাম্মদ আশিকুর রহমান. বুড়িচং উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায়, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ জুয়েল সরকার ও উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোছা. সুলতানা ইয়াসমিন ।
এতবারপুরের চরের মাঠে গিয়ে দেখা যায়,সেখানে ২৫ বিঘা জমিতে বিনাধান-১৯ ও বিনাধান-২১ জাতের ধান চাষ হয়েছে। মাঠে পাকা ধানের সুবাস। কাঠফাটা গরম উপেক্ষা করে ধান কাটছেন কৃষকরা। ঘামে ভিজে গেছে গায়ের জামা। গামছায় মাঝে মাঝে মুছছেন। পাশেই জমিতেই স্ত্রীকে ধান মেশিনে ছড়াচ্ছেন এক কৃষক। এই সময়ে ধান পেয়ে খুশি তারা। তাই গরমেও খুশি মনে কাজ করছেন তারা।
এতবারপুর গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন ও নাজির আহমেদ বলেন, এসময়ে চরের জমি খালি পড়ে থাকতো। কেউ কেউ ধইঞ্চা চাষ করতেন জ্বালানির জন্য। কারণ ঢল ও খরায় ধান নষ্ট হয়ে যেতো। এবার প্রথম আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে বিনাধান-১৯ ও বিনাধান-২১ জাতের ধান চাষ করেছি। প্রথমে ঢলে ৫দিন ধানের চারা পানিতে ডুবে ছিলো। আমরা আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। শেষ দিকে এলো খরা। তারপরে আমরা ভালো ফলন পেয়েছি।
বুড়িচং উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, আউশ মৌসুমের শুরুতে গোমতীর চরের মাঠটিতে আউশ আবাদ সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করে উপজেলা কৃষি অফিস বুড়িচং। বিনা উপকেন্দ্র কুমিল্লার বীজ সহায়তার আওতায় বিনাধান-১৯ ও বিনাধান-২১ জাতের ৫ কেজি করে বীজ প্রদান করা হয় ২০ জন কৃষককে।
ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড.মোহাম্মদ আশিকুর রহমান বলেন, বিনাধান-১৯ ও বিনাধান-২১ জাতের ধানের জীবনকাল কম। ফলন ভালো হয়। এতে এক জমিতে চার ফসল করা সম্ভব। এদিকে এই ধান চাষে সেচসহ অন্যান্য খরচ নেই বললেই চলে। খরা সহিঞ্চু হওয়ায় কৃষকরা এই দুইটি ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com