তৈয়বুর রহমান সোহেল।।
২০০৯ সালে কুমিল্লার বিবির বাজার স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি দুই দেশের পর্যটকদের আসা-যাওয়ার কার্যক্রম চলে এই বন্দর দিয়ে। কিন্তু বন্দর চালু হওয়ার প্রায় ১৪ বছর অতিবাহিত হতে চললেও এই বন্দরে স্থাপিত হয়নি ব্যাংকের কোনো শাখা। যার কারণে ট্রেজারি চালান, আমদানি শুল্ক আদায়সহ ব্যাংক সংক্রান্ত যাবতীয় কাজে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ছেন এখানকার ভোক্তারা।
শুধু বন্দরের সাথে যুক্তরা নয়, বিবির বাজার ও এর আশপাশের এলাকার মানুষজনকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে চকবাজারে গিয়ে সারতে হয় ব্যাংকিং কার্যক্রম। এতে করে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন তারা।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, বিবির বাজার স্থলবন্দর অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় শীত ও বসন্ত মৌসুমে বেশ চাঙা থাকে। এসময়ে আমদানি-রপ্তানি অন্য সময়ের তুলনায় বেশি হয়। পর্যটকের স্রোতও থাকে বেশি। বর্ষা মৌসুমে কার্যক্রম মন্থর থাকে। এছাড়া বছরের অন্যান্য সময় বন্দর চলে ঢিমেতালে। ব্যাংক কার্যক্রম চালু থাকলে প্রায় সবসময়ই বন্দর জমজমাট থাকতো।
সূত্র জানায়, ব্যাংকের শাখা না থাকার কারণে বন্দর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে গিয়ে চালান কাটেন ব্যবসায়ীরা। এতে সময়ের অপচয় হয়। তাছাড়া এ কাজে ঝুঁকি থাকে। এ কারণে আমদানি-রপ্তানির কাজে ব্যাঘাত ঘটে। ব্যাংকের শাখা চালু থাকলে অল্প সময়ে কাজ হতো। বাড়তো কাজের পরিধি। অনাকাঙ্খিত চাপ কেটে গিয়ে বন্দরে আসতো গতি। স্থানীয়রা উপকারভোগী হলে লোকসানের মুখে পড়তো না কোনো ব্যাংক।
সোনালী ব্যাংক কুমিল্লার প্রধান শাখার এক কর্মকর্তা জানান, বন্দরের ব্যবসায়ীরা আমাদের অনুরোধ করছেন শাখা খোলার বিষয়ে। আমাদের টিম সেখানে গিয়েছে। পরিদর্শন শেষে মনে হলো, বন্দরে ব্যাংকের শাখা খোলা যেতে পারে।
এ কর্মকর্তা জানান, বিবির বাজার স্থলবন্দর ছাড়াও কুমিল্লার আরো কয়েকটি এলাকায় শাখা খোলার অনুরোধ জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। এখন তারা সাড়া দিলে বন্দরে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করা যাবে।
বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ অ্যাজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, এক ব্যাংক শাখায় পুরো বন্দরের চিত্র বদলে যাবে। আমরা এটা নিয়ে কয়েক বছর ধরে কাজ করছি। সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাড়া দিয়েছেন। বন্দরের কার্যক্রম মসৃণ ও ঝুঁকি এড়াতে এখানে ব্যাংক শাখা খোলার বিকল্প নেই।
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কুমিল্লার কমিশনার খালেদ মোহাম্মদ আবু হোসেন বলেন, বন্দরে ব্যাংকের শাখা খোলার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বন্দরে কয়েক দফা পরিদর্শন করেছেন। ব্যাংক শাখা খুলতে হলে সবার সমন্বতি উদ্যোগের দরকার। আমরা উদ্যোগী হয়েছি। এখন তারা সায় দিলে কাজ হবে।
কমিশনার আরো জানান, প্রথমে সোনালী ব্যাংকের শাখা চাওয়ার কারণ হলো, সেখানে চালান কাটা যায়। একটি শাখা চালু হয়ে গেলে অন্যান্য ব্যাংকও শাখা খোলার বিষয়ে উদ্যোগী হবেন।
প্রসঙ্গত, বিবির বাজার দেশের ১৩তম স্থলবন্দর। যার প্রতিষ্ঠাকাল ২০০২ সালের ১৮ নভেম্বর। বন্দরটির কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৯ সালের ১৩ এপ্রিল।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com