সাইফুল ইসলাম সুমন ॥
গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরেই অসুস্থ এসি ইলেকট্রিশিয়ান মো. হুমায়ুন কবির। ২০০৯ সাল থেকে তিনি বিরল এক রোগে আক্রান্ত। হুমায়ুন কবির চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার মেঘদাইর মোল্লা পাড়ার মৃত. ইউনুছ মোল্লার ছেলে।
বিরল রোগে আক্রান্ত হুমায়ুন কবিরের সুস্থতার জন্য দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চেষ্টা চলছে। চিকিৎসকরা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। হুমায়ুন কবিরও কঠোরভাবে লড়াই করছেন এই পরিস্থিতির সঙ্গে। এখন পর্যন্ত তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান হুমায়ুন কবির। তিনি তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা কামনা করেছেন।
জানা যায়, মিরপুর বাংলা কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে এসির সার্ভিসিংয়ের কাজ শিখে সৌদিআরবে চলে যান। সৌদিআরবে থাকা অবস্থায় ধীরে ধীরে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। হাত পা ধীরে ধীরে চিকন হয়ে যাচ্ছে। পা দিয়ে হাটতে অসুবিধা হচ্ছে এবং হাত দিয়ে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় দেশে ফিরে এসে ঢাকার পিজি হসপিটালসহ বিভিন্ন মেডিকেলে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। কিন্তু তার অবস্থার কোন উন্নতি দেখা যায় নি। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তার নার্ভের সমস্যা হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হুমায়ুন কবির ভারতের ব্যাঙ্গালুরু ক্রিস্টান মেডিকেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। সেখানকার চিকিৎসকরা তার শারিরীক অবস্থা দেখে বলেন, বংশানুক্রমিকভাবে এসব রোগ হয়ে থাকে। ৩০/৩২ বছর বয়স হলে এ রোগ দেখা দেয়। কিন্তু হুমায়ুন কবিরের বংশ কিংবা আত্মীয় স্বজনের মধ্যে কারোই এই রোগ ছিল না।
অপরদিকে হুমায়ুন কবিরের হাত পা ধীরে ধীরে চিকন হয়ে যাওয়ার কারণে হাত ও পায়ের ব্যালেন্স হারিয়ে যাচ্ছে। পা দিয়ে হাটতে অসুবিধা হচ্ছে। হাটতে হলে অন্য কারো সহযোগিতা বা কোন কিছু ধরে ধরে হাটতে হয়। সামান্য কিছু সময় হাটাহাটি করলে তার শরীর কাপতে শুরু করে পরে সে অচেতন হয়ে পড়ে। হাত দিয়ে কোন কাজই করতে পারছেন না তিনি। ভাত খেতে হলেও অন্যের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়।
হুমায়ুন কবির সৌদিআরব থেকে দেশে ফিরে এসে ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে অল্প কয়েক মাস চাকরি করেন। কিন্তু তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সে বাড়িতে চলে আসেন। এসি ও ফ্রিজ সার্ভিসিংয়ের কাজে দক্ষতা থাকায় পার্শ্ববর্তী পালাখাল বাজারে এসি ও ফ্রিজ সার্ভিসিংয়ের দোকান দিয়ে বসেন। তিনি সেখানে দক্ষতার সহিত এসি ও ফ্রিজ সার্ভিসিং করতেন। বর্তমানে তার শারিরীক অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় সে ওই কাজটুকুও করতে পারছেন না।
বিরল রোগে আক্রান্ত হুমায়ুন কবির বলেন, আমার হাত ও পায়ে ব্যালেন্স না থাকায় আমি চলাফেরা ও কাজকর্ম করতে পারছিনা। চিকিৎসার জন্য পিজি হসপিটালসহ ঢাকার বেশ কয়েকটি হসপিটালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছি এমন কি ব্যাঙ্গালুরু ক্রিস্টান মেডিকেলেও চিকিৎসার জন্য গিয়েছি। আমি সুস্থ হয়ে পূর্বের জীবনে ফিরে যেতে চাই। আমার এ রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা কামনা করছি।
ইউপি সদস্য গিয়াসউদ্দিন মোল্লা বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হুমায়ুন কবির অসুস্খ। অসুস্থতার কারণে চলাফেরা করতে বা কোন কাজ কর্ম করতে পারছেন না। উন্নত চিকিৎসা নিলে হয়তো সে সুস্থ হয়ে পূর্বের জীবনে ফিরে যেতে পারবে।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com