ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফের বেঁকে গেছে রেললাইন : ঢালা হচ্ছে পানি

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
 তাপদাহে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়  রেললাইন বেঁকে লাইনচ্যুত হয় কন্টেইনার ট্রেনের সাত বগি। ক্ষতিগ্রস্থ হয় রেললাইন ও স্লিপার। অন্তত ত্রিশ ঘন্টা প্রচেষ্টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিকের ১৬ ঘন্টা পর ফের একই স্থানে ফের বেঁকে গেছে রেললাইন। এতে আবারও বন্ধ হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম-সিলেট থেকে ঢাকা অভিমুখী আপ লাইনে ট্রেন চলাচল। তবে ডাউন লাইন দিয়ে চট্টগ্রাম-সিলেট-ঢাকা রেলপথে ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। এতে করে ভোগান্তি বাড়ছে যাত্রীদের।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০ টায় নোয়াখালী-ঢাকাগামী অন্ত:নগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের অদূরের দাড়িয়াপুর (গত বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনাস্থল) অতিক্রম করে। এরপ বেলা ১১ টার দিকেই লাইনটি আগের স্থানেই ফের বেঁকে যায়। এসময় সরে যায় বেশ কয়েকটি স্লিপার। এতে করে চট্টগ্রাম-সিলেটের সাথে ঢাকামুখী আপলাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে ডাউন লাইন দিয়ে চট্টগ্রাম-সিলেট-ঢাকা রেলপথে ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। বেঁকে যাওয়া লাইনটি সচল করতে চলছে মেরামত কাজ। তাছাড়া বেঁকে যাওয়া লাইনে পানি ঢেলে তাপমাত্রা কমানোর প্রচেষ্টাও চালানো হয়। উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে ৩০কিলোমিটার গতিসীমায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।এদিকে দুপুরের পর তীব্র গরমের কারণে আশুগঞ্জের তালশহর রেলস্টেশনের ক্রসওভার বেঁকে যায়। স্টেশন সূত্র জানায়, ক্রসওভার বেঁকে গেলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে অপেক্ষমান যাত্রীরা জানান, রেললাইন বেঁকে যাওয়ার কারণে প্রতিটি ট্রেনই বিলম্বে আসা-যাওয়া করছে। এতে করে আমরা সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছি না। রেল লাইনটি মেরামত করার পর আবারো বেঁকে যাওয়ায় আমাদের মনে নানা শঙ্কার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত রেললাইন মেরামতসহ লাইন বেঁকে যাওয়া রোধে এবং রেলযাত্রাকে নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকরী ব্যবস্থা নিবেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার রফিকুল ইসলাম জানান, ‘অত্যাধিক গরমের কারণে আপলাইনে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ লাইন মেরামত করার পর পুনরায় লাইনটি বেঁকে গেছে। এতে ঢাকামুখী আপলাইন ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ডাউন লাইন দিয়ে চট্টগ্রাম-সিলেট-ঢাকা রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। কিন্তু ডাউন লাইনের অবস্থাও ভালো নয়। অত্যধিক গরমে ডাউন লাইনটিও বেঁকে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে ৩০কিলোমিটার গতিসীমায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেখেছি। বেঁকে যাওয়া লাইনটি সচল করতে মেরামত কাজ চলছে।’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী মালবাহী কন্টেইনার ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। রেলওয়ে বিভাগ জানায় গরমে লাইন বেঁকে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর রেলওয়ে বিভাগ ৩০ ঘন্টার তৎপরতা চালিয়ে শুক্রবার রাতে ঢাকামুখী আপলাইনে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করলেও শনিবার সকাল থেকে ফের তা বন্ধ হয়ে পড়ে।