ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টয়লেট দখল করে পৌর কাউন্সিলরের দোকান!

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দুই যুগ আগে জেলা পরিষদের জায়গা সমন্বয় করে গণশৌচাগার (টয়লেট) নির্মাণ করে পৌরসভা। সেই টয়লেটের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ মিলেছে পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের আমিনপুরে জেলা পরিষদের জায়গায় অবৈধ ওই দোকানে কনফেকশনারি চালু করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বিগত ১৯৯৭ সালে আমিনপুর পৌরসভা এলাকাধীন গ্রামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের জায়গায় সমন্বয় করে পৌরসভা একটি গণশৌচাগার তৈরি করে। একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তদানীন্তন পৌর চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার এটি উদ্বোধন করেন। এর ক’বছর পর গণশৌচাগারটি প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে যায়। গত পৌর নির্বাচনে ৭নং কাউন্সিলর হিসেবে জয়লাভ করেন ফারুক মিয়া। গণশৌচাগারের ঠিক পাশেই জেলা পরিষদ মার্কেটে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর ফারুক মিয়ার নিজস্ব কার্যালয় বিদ্যমান। নির্বাচনে জয়লাভের পর ফারুক নিজ গ্রামের কোরবান মিয়াকে পৌরসভার মালিকানাধীন গণশৌচাগারটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব পেয়ে কোরবান মিয়া গণশৌচাগারটি কিছুটা সংস্কার করাতে গিয়ে গণশৌচাগারটির আকৃতি বদল করেন। এসময় গণশৌচাগারের সামনে তাকে একটি দোকান তৈরি করার নির্দেশ দেন কাউন্সিলর ফারুক মিয়া। জেলা পরিষদের মালিকাধীন জায়গায় কোন প্রকার অনুমোদন না নিয়েই স্থায়ীভাবে এই দোকান তৈরি করা হয়। দোকানটি মাসিক দেড় হাজার টাকার মৌখিক চুক্তিতে গণশৌচাগারের ইজারাদার কোরবান মিয়ার কাছে ভাড়া দেন।
ইজারাদার কোরবান মিয়া বলেন, ‘আমার কাছে গণশৌচাগারটি হস্তান্তর করার পর এটি সংস্কার করেছি। আগে অনেক অপরিষ্কার ছিলো। সংস্কার করতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আর দোকানটি কাউন্সিলর ফারুক ভাইয়ের নির্দেশেই আমি তৈরি করেছি, এটি কাউন্সিলর ফারুক ভাইয়েরই।’ অভিযুক্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক মিয়া বলেন, ‘কোরবান মিয়ার কথা সঠিক নয়। সে বসতে পারে না বলে দোকান তৈরি করেছে।’ জেলা পরিষদের সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।’ জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার রজব আলী বলেন, আমরা এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমিনপুরের এই দোকান নির্মাণ করা জায়গাটি কাউকে জেলা পরিষদ লিজ দেয়নি। তাদের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। এ বিষয়ে জড়িতদের চিঠি দেওয়া হবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সচিব শামসুদ্দিন বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘জেলা পরিষদের জায়গায় গণশৌচাগারটি তৈরি করা আছে। নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন থাকায় পরিষ্কার করতে বলেছি। আমরা কাউকে দোকান নির্মাণ করতে বলিনি।’