ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কজুড়ে অবৈধ স্থাপনা

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড মোড়সহ বিভিন্ন স্থানের দুই পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। এছাড়া মহাসড়কের যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, অবৈধভাবে সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যাণ্ড বানানোয় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। আর এসবে জনমনে বাড়ছে ভোগান্তি।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা মিলে এমন চিত্র। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগ বলছে শিগগিরই এসব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচলনা করা হবে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক এন টু,আন্ত:জেলা মহাসড়ক এন ১২ খাঁটিহাতা বিশ্বরোড় মোড়, কুট্টাপাড়া, শাহবাজপুর এলাকায় এসব অবৈধ স্থাপনা ও সিএনজি স্ট্যাণ্ড যানযট এবং দুর্ঘটনার কারণ। অবৈধ এসব স্থাপনার কারণে দিন দিন সড়ক হচ্ছে সঙ্কুচিত। যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি প্রায়শই ঘটছে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড মোড় এলাকা। সারাদেশের সাথে যোগাযোগের জন্য জায়গাটি অতিক্রম করতে হয়। যে কারণে প্রতিদিন এখানে কয়েকশ’ গণপরিবহণের যাত্রী উঠানামা করে থাকেন। গণপরিবহণের পাশাপাশি এখানে বিদ্যমান সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যাণ্ড। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই পয়েন্টে চারপাশ দখলে নিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী অবৈধ দখলদাররা। এদিকে বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক আইন অনুযায়ী, ‘কোনো সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না।’ বাস্তবতায় প্রচলিত আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি পদর্শন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) জায়গায় অবৈধ স্থাপনা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যাণ্ড গড়ে তুলেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালীরা একচালা ঘর বানিয়ে বসিয়েছেন বিভিন্ন খাবার হোটেল, ফল ও চায়ের দোকান। কোনো কোনো দোকানদার তাদের পণ্যের পসরা মহাসড়কে রাখায় দুর্ভোগ বাড়ছে আরও কয়েকগুণ। বিশ্বরোড মোড়ে চারটি সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যাণ্ড গড়ে তুলেছে স্থানীয় প্রভাবশালী শ্রমিক নেতারা। এসব স্যাণ্ড থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী উঠানামা করেন। অপরদিকে মহাসড়কের দু’পাশ দখল করে বসছে অস্থায়ী বাজার। ছোট ছোট দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করছেন অন্তত দুই শতাধিক ব্যক্তি। স্থানীয় এক পথচারী বলেন, ‘প্রতিদিন শতশত সিএনজি দাঁড়িয়ে থাকে। এতে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হয়।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি জানান, ‘স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব অবৈধ স্থাপনার দোকান থেকে প্রতিদিন ৮০-৩৫০ টাকা ভাড়া তুলেন।’ বিশ্বরোড মোড়ে উত্তর পশ্চিম কোণে সড়কের উপর অবৈধ অটোরিকশার স্ট্যাণ্ড থাকায় হচ্ছে চাঁদাবাজি ও যানযট যা দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, সড়ক বিভাগ এর আগেও কয়েকবার উচ্ছেদ করছে। কিন্তু কিছুদিন পর আবারও অবৈধ দোকানপাট বসে যায়।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. শাহজালাল আলম জানান, ‘ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনা প্রায়শই উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আবারও তারা বসে যায়। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।’ সড়ক ও জনপথ (সওজ)বিভাগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ ভৌমিক বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত বছর মহাসড়কের বিশ্বরোড ও সহিলপুর উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এবারও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।’