ভ্যান গাড়িতে গাছের চারা বিক্রি করা কুমিল্লার তাজগীর হোসেন সরকারি মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। পাশাপাশি টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ চালাতো সে। মা মারা গেছেন অনেক আগেই। লাকসামের নানার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করেছে সে। কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে থাকতে হতো তাকে। সদ্য প্রকাশিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে তাজগীর হোসেন খুলনা সরকারি মেডিকেল কলেজে চান্স পেলেও ভর্তিসহ লেখা পড়ার খরচ চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দু:চিন্তায় তাজগীর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের খুন্তা গ্রামের নানার বাড়িতে থেকে বড় হয়েছেন তাজগীর। লাকসাম উপজেলার বরইগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ -৫, এরপর জ্যোতিপাল মহাথের বৌদ্ধ অনাথ আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় এ গ্রেড, একই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ হতে ৪.৯৪ এবং পরবর্তীতে লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ হতে জিপিএ -৫ অর্জন করেছে। তার লেখা পড়া চালিয়ে যেতে স্থানীয় লোকজনসহ শিক্ষকরা সহায়তা করেছেন।
মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারা তাজগীর হোসেন বলেন, আমার মা মারা যাওয়ার আগে আমাকে বলতেন, তোকে ভিক্ষা করে হলেও পড়াবো। তার পরেও তোকে ডাক্তার হতে হবে। আমার মা বেঁচে থাকলে আজ তিনি অনেক খুশি হতেন। আমি এ পর্যন্ত অনেক কষ্ট করে পড়ালেখার খরচ চালিয়ে আসছি। টিউশনি ও রাস্তায় রাস্তায় গাছের চারা বিক্রি করেছি। আমরা দুইভাই নানার বাড়িতে থাকি। অর্থাভাবে ছোট ভাইয়ের লেখা পড়া বন্ধ। অপর দুই ভাইকে নিয়ে আমার বাবা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের কইয়া গ্রামে বাস করছেন। বাবার আর্থিক অবস্থাও ভালো না। সে আরও জানায় ‘ নানার বাড়িতে থাকলেও মামাদের আর্র্থিক অবস্থাও ভালো নয়। তারা (মামা) ভ্যান গাড়ি চালিয়ে সংসার চালায়। তাই এখন মেডিকেলে ভর্তি, বই, অন্যান্য খরচ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবার সহযোগিতা চাই।’
লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিতা সফিনাজ বলেন, তাজগীর হোসেনের সংগ্রামী জীবন আমাদের মুগ্ধ করে। তার জন্য অনেক শুভ কামনা। সে যোগাযোগ করলে আমরা তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করবো।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com