মহাসড়ক ইজারা ও অতিরিক্ত চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদে চালকদের বিক্ষোভ

প্রতিনিধি ।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে মহাসড়কে সিএনজি স্ট্যান্ড ইজারা, জিপির নামে অতিরিক্তি চাঁদা আদায়, চালকদের মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে সিএনজি অটোরিকশা-ইজিবাইক চালকরা। এসময় পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলামের অপসারণ দাবি করা হয়। রোববার কয়েকশত সিএনজি অটোরিকশা ও ইজিবাইক নিয়ে চালকরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমবেত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করতে যান। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে অফিস সহকারীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। এরপর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে প্রায় এক ঘন্টাব্যাপী কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য রাখেন, সিএনজি চালক মো. আবদুর রশিদ, মো. আবুল কালাম, আলী হোসেন প্রমূখ। সিএনজি অটোরিকশা চালকরা অভিযোগ করেন, স্ট্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে দেবিদ্বারের জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ পর্যন্ত কুমিল্লা- সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ইজারা দেওয়া হয়েছে। এতে জিবি ওঠানোর নামে চাঁদাবাজি হয়। অতিরিক্ত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চালকদের মারধর করা হয়। এজন্য এখানে যানজট লেগে থাকে।
পৌর-সচিব মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাকে অভিযুক্ত করবে কেন ? পৌর প্রশাসকের স্বাক্ষরে ইজারা দেয়া হয়েছে। হাইওয়ে সড়কে পূর্বের নিয়মেই ইজারা দেয়া হয়েছে। হাইওয়ের পান্নারপুল-বাখরাবাদ স্ট্যান্ড তালিকায় থাকলেও ইজারা দেয়া হয়নি। ওখানে টোলের নামে চাঁদা তোলার অভিযোগ পেয়ে বাজার পরিদর্শক আলমগীর হোসেনকে তা বন্ধ করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমলকৃষ্ণ ধর বলেন, ইজারাদার নিয়ম বহির্ভূতভাবে টোল বা চাঁদা আদায় করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই ইজারা বাতিল করতে পারেন। নতুন করে ইজারা প্রদানের বিষয় আমাকে অবহিত করা হয়নি। ইজারা প্রদান করলে চালক, ইজারাদার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রশাসনের লোকজনের মতামতের ভিত্তিতে করা প্রয়োজন ছিল। টোল আদায়ের পরিমাণ নিয়ে চালকদের সাথে মতবিনিময় এবং সিদ্ধান্তগুলো মাইকিং করে জানিয়ে দিলে চালকরা বিক্ষোভ- প্রতিবাদ, সড়ক অবরোধ করার সুযোগ পেতনা। ইজারাদারও টোলের নামে অতিরিক্ত চাঁদা আদায়ের সুযোগ পেতো না।
দেবিদ্বার পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী মহাসড়ক ইজারা দেয়ার বিষয়ে পূর্বে বলেছেন, স্ট্যান্ড মহাসড়কে কিনা তিনি জানেন না। এ বিষয়ে পৌর সচিব ভালো বলতে পারবেন। বিক্ষোভের পরে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৬ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদের এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মহাসড়কে সিএনজি স্ট্যান্ডটি ইজারা না দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত হয়। তারপরও ইউএনও কার স্বার্থে কুমিল্লা- সিলেট মহাসড়ক ইজারা দিয়েছেন তা তিনি ভালো বলতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন,মহাসড়ক ইজারা দেয়ার কথা নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। আইনের ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।