কখনও সাংবাদিক কখনও তিনি এসপির লোক!
প্রতিনিধি।।
পরিচয় দেন বিএনপির প্রভাবশালী ওয়ার্ড সেক্রেটারি, কখনো সাংবাদিক, কখনো এসপির ঘনিষ্ঠ লোক। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সন্ধান মিলেছে এমনই এক বহুরূপী লোকের। নাম সালাউদ্দিন। উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে। তবে থানা সূত্রে জানা যায় সালাউদ্দিনের নামে রয়েছে ৪ টি মাদক মামলাসহ ৫ মামলা। ৪ মাদক মামলার মধ্যে ২০১১ সালে ঢাকার সূত্রাপুর থানায়, ২০২৩ সালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় ও একই বছর চৌদ্দগ্রাম থানায় আরেকটি ও ২০২৪ এর ২১ অক্টোবরে চৌদ্দগ্রাম থানায় ১টি করে মামলা রয়েছে। ২০২২ সালে চৌদ্দগ্রাম থানায় রয়েছে আরেকটি মারামারির মামলা।
স্থানীয়রা বলছেন,হঠাৎই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হাইওয়ে হোটেলের মালিক হয়ে যান সালাহউদ্দিন। আগস্ট বিপ্লবের পর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন এলাকায়। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে গড়ে তোলেন সখ্যতা। নেতাদের সাথে তোলা ছবি প্রচারে প্রভাব বিস্তারে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। সালিশ দরবারে সদলবলে হাজির হয়ে নিজের মত চাপিয়ে দেয়া, কিংবা অর্থ চুক্তিতে অন্যায়কে ন্যায়ে পরিণত করায় হয়ে উঠেছেন পারদর্শী। চাঁদার দাবিতে মারধর, এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেন অন্যদের। বৈঠকে থানা পুলিশের সামনেই প্রতিপক্ষকে হুমকি দেন বিএনপির উপজেলা যুগ্ম আহ্বাবায়ক এক নেতার নাম করে।
একজনের এতো গুণের অত্যাচার ও প্রভাবে যখন স্থানীয়রা অতিষ্ঠ, আতঙ্কিত তখন থানা পুলিশের রেকর্ড ভয় বাড়িয়েছে আরো বেশি। বেরিয়ে এসেছে মাদকের গডফাদারের কথা। আগষ্ট বিপ্লবের পর গত বছরে ২১ অক্টোবর মাদকের চালানসহ আটক হয় সেনাবাহিনীর হাতে। জামিনে বের হয়ে আসার পর ভাগিয়ে নেন ঘোলপাশা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারির পদ। তারপর হয়ে ওঠেন আরো বেপরোয়া।
নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিলান ভিজিটিং কার্ড, দাবি করেন মোটা অংকের চাঁদা। সর্বশেষ সালাউদ্দিনের জম জম হোটেলের দক্ষিণ পাশের আরেক ট্রাক হোটেলের মালিক সালমা আক্তারের কাছে চাঁদা দাবি ও মারধরের কারণে সালাউদ্দিনকে অভিযুক্ত করে ১০ দিনের ব্যবধানে পৃথক ৩ টি অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। ভুক্তভোগী সালমা আক্তার বলছেন, চাঁদার দাবিতে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। সালাউদ্দিন ও তার সহযোগীদের অত্যাচারে বন্ধ তার হোটেল। মারধর করে তাড়িয়ে দেয়া হয় হোটেল কর্মচারীদের। অন্যের সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে সালমার বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগও সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন বলেন, 'সালমা আক্তারের ঘটনাটি মিথ্যা। মাদক নিয়ে আটকের বিষয়ে বলেন আমাকে সেনাবাহিনী ধরেছে তাতে আপনার সমস্যা কি।'
এ বিষয়ে ঘোলপাশা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক রিয়াজ উদ্দিন মেম্বার বলেন,'২নং ওয়ার্ডে প্রস্তাবিত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সালাউদ্দিনের নাম রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর হাতে মাদকসহ আটক হওয়া ও ৪ মাদক মামলার আসামি কীভাবে কমিটিতে স্থান পেল জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'মাদক মামলার আসামি কি না জানিনা। তবে আপনার কাছ থেকে শুনলাম।'
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com